ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ধর্ষণের শিকার এক ১৩ বছরের কিশোরী কন্যা সন্তান প্রসব করেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগষ্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সে সন্তান জন্ম দেয়।
এই কিশোরীর ভবিষ্যৎ ও নবজাতক কন্যা শিশুর পিতৃপরিচয় নিয়ে চিন্তিত তার পরিবার। পাশাপাশি তার পরিবার দুই ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
মামলার নথি ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের এক কৃষকের ৮ছেলে-মেয়ের মধ্যে ৩য় মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে কৃষি কাজ করেন। ছেলেমেয়েরা স্কুল থেকে এসে বাবা-মা বাড়ি ফেরার আগ পর্যন্ত ঘরের দৈনন্দিন কাজ করে। গত বছরের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় তাদের ৩য় কিশোরী মেয়েটি বাড়ির পাশে মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে রুবেল মিয়ার (৩৫) মুদিমালের দোকানে কয়েল আনতে যায়। রুবেলের দোকানে একই এলাকার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে সাইদুল মিয়া (২০) উপস্থিত ছিলেন। এসময় দোকানদার রুবেল মিয়া ও সাইদুল মিয়া ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক ধরে দোকানের পেছনে নিয়ে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে একে একে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় দুজন হুমকি দিয়ে বলে, যদি এই ঘটনা জানাজানি হয় তাহলে খুন করে ফেলা হবে। প্রাণের ভয়ে ওই কিশোরী বিষয়টি কাউকে জানায়নি। এই ঘটনার ৬ মাস পর ওই কিশোরী বমি বমি ভাব ও মাথা ঘুরিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ পরিবারের সদস্যদের চাপে অবশেষে ওই কিশোরী দুইজন ধর্ষণের কথা জানায়। পরে জেলা শহরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানায় ওই কিশোরী ২৩ সপ্তাহের গর্ভবতী। এই ঘটনায় চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল দুই লম্পট রুবেল মিয়া ও সাইদুল মিয়াকে আসামী করে কিশোরীর বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রুবেল’কে পুলিশ গ্রেফতার করে কিন্তু সাইদুল পালিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিজারিয়ানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাসপাতালে কিশোরী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। ধর্ষক দুইজন হওয়ায় এই নবজাতকের পিতা কে তা শনাক্ত করা যায়নি। এখন ওই কিশোরীর পরিবার তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কসবা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর আমরা সাথে সাথে একজন আসামীকে গ্রেফতার করি এবং ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছি। কিশোরীটি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। শিশুটির পিতৃ পরিচয় শনাক্ত করতে আইন অনুযায়ী সব করবো আমরা। যেহেতু একজন আসামী গ্রেফতার আছে তার নমুনা ও নবজাতকের নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। পলাতক অপর আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। গ্রেফতারের পর তারও ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হবে।’