সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের হাছনবাহরসহ ১৩ গ্রামের বাসিন্দাদের উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সাথে সংযোগ রাস্তা ভাঙ্গায় বাঁশের সাঁকোই রাস্তা পারাপারের একমাত্র ভরসা। এ সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে প্রায় তেরটি গ্রামের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন ২/৩ হাজার মানুষ।
কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায়ও পোহাতে হয় অনেক দুর্ভোগ। বছরের পর বছর একটি ব্রীজের অপেক্ষা কয়েকটি গ্রামবাসীর।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসলে নেতা আর কর্মীদের মুখে শুধু কথার ফুলঝুরি ফোটে।
নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর সাক্ষাৎ মেলে না। বছরের পর বছর শুধুই আশ্বাস আর আশ্বাস। একটি পাকা ব্রীজের অভাবে এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,হাছনবাহারের গ্রামের বাশের সাঁকোর উত্তর দিকে সুলতানপুর,নোয়াপাড়া,হযরত শাহ্জালাল হিঃকোঃ দাখিল মাদ্রাসা রসরাই ,মুক্তিযোদ্ধা কেপ্টেন হেলাল খসরু হাইস্কুল,লক্ষীপুর ইউনিয়ন ক্লিনিক,এরোয়াখাই,বাংলাবাজার এবং দক্ষিনে হাছনবাহার, বৈঠাখাই শাহ্ আরফিনবাজার,বৈঠাখাই মাদ্রাসা, আলীপুর, মুহিবুর রহমান মানিক উচ্চ বিদ্যালয়,সোনাপুর,নূরপুর বাজারসহ বেশ কিছু গ্রাম অবস্থিত। এসব গ্রামের লোকজনকে এই সাকো ব্যবহার করে জেলা সদরে যেতে হয়। সাঁকোর স্থলে ব্রীজ হবে এই আশায় এলাকার মানুষ বছরের পর বছর কাটাচ্ছেন।
হাছনবাহার গ্রামের (সফটওয়্যার ডেভলাপার) কামরুল ইসলাম বলেন, বছরে ৬ মাস বৃষ্টি হয়। হাছনবাহারের রাস্তা ঘাটের অবস্থা একেবার নাজেহাল।এ অবস্থায় কোন মানুষ অসুস্থ হয় গেলে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার আগেই সে মারা যাবে। কারণ সদরে যাওয়ার এত লম্বা বাঁশের সাঁকো পাড়ি দেয়া সম্ভব নয়।
তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রায় ২/৩ হাজার মানুষ এই ভাঙ্গা ব্রীজের উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারে আনতে ও পশু পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
আলীপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির জানান, হাছনবাহার ভাঙ্গার সাঁকো পার হয়ে কলেজে যেতে হয়। চলার সময় সেটি দোলে। অনেকে প্রায়ই সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যায়।
৯ নং সুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম (বীরপ্রতীক) বলেন ,আমি চেয়ারম্যান হয়েছি পাঁচ মাস। সুরমা ইউনিয়নে আমার আগে অনেক চেয়ারম্যান হয়েছেন। কেউ হাছনবাহারের ভাঙ্গার ব্রীজের কথা বলেননি। এখানে ব্রীজ জরুরী। ব্রীজ এ সরকারের আমলেই হবে ইনশাআল্লাহ। দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চোধুরী বাবু বলেন, হাছনবাহার সুরমা ইউনিয়নের এবং সুলতান লক্ষীপুর ইউনিয়নের এই দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে ব্রীজের বিষয়ে আমি ছাতক দোয়ারাবাজারের সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক এমপি মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে তাড়াতাড়ি সাঁকোর স্থলে ব্রীজ করে দেয়ার ব্যবস্থা করবো। দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকোশলী সাবিরুল রহমান বলেন, হাছনবাহারের ভাঙ্গা না দেখে আমি কিছুই বলতে পারবোনা।