স্টাফ রিপোর্টার : দৈনিক সকালবেলা’র সম্পাদক ও প্রকাশক সৈয়দ এনামুল হক এর মৃত্যুতে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল ২৭ শে নভেম্বর রোজ শুক্রবার বাদ আসর সকালবেলা’র সম্পাদকীয় কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তিনি গত ২৭ অক্টোবর ২০২০ ইং তারিখে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। উক্ত
আলোচনা অনুষ্ঠানে মহরহুমের স্ত্রী বেগম নিলুফার আক্তার বলেন, আজ তাঁর মৃত্যুর এক মাস অতিবাহিত হয়েছে। আমাকে এই ভাবে এখানে এসে কথা বলতে হবে এটা আমি কখনোই ভাবিনি। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই সংবাদপত্রের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাক, আজাদ, জনকন্ঠ, অবজারভারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি সব সময় নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করতেন এবং বই পড়তেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ ও জাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবার নয়। দৈনিক সকালবেলা’র সকল সাংবাদিক, বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি ও সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দৈনিক সকালবেলা পত্রিকা ছিল তাঁর স্বপ্ন। পত্রিকাটিকে বাচিঁয়ে রাখার জন্য আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি আশা করব, যার যা দায়িত্ব ছিল বা আছে তা সঠিকভাবে পালন করবেন। দায়িত্ব পালন করলে পত্রিকাটি সঠিকভাবে চলবে। তিনি আরো বলেন, তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। কখনো তাকে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতে দেখিনি। কারো উপর কখনো প্রতিশোধ মূলক আচরণ করতে দেখিনি। যারা তার উপর অন্যায় করত তাদের সাথেও তিনি কখনো রাগ করতেন না। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর সমস্ত স্মৃতি হৃদয়ের মনিকোঠায় আছে।
১৯৯৭ সালে তিনি এই পত্রিকাটি সাপ্তাহিক সকালবেলা হিসেবে প্রকাশের অনুমোদন পেয়েছিলেন। এরপর পত্রিকাটি ২০০১ সালে জাতীয় দৈনিক হিসেবে অনুমোদন পায়। পত্রিকাটি ২০১৭ সালে ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন হয়েছে। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ্র কাছে আমি এই প্রার্থনা করি, পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যেন মাফ করে দেন এবং জান্নাত নসিব করুন- আমিন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পল্লবী মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল মোঃ আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, এনাম ভাইকে আমি বড় ভাই হিসেবে শ্রদ্ধা করতাম। তাকে আমি দুলাভাই বলে ডাকতাম। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। তাঁর মত সৎ মানুষ হয় না।
দৈনিক সকালবেলার উপ-সম্পাদক মোঃ এফ এম আনসারী বলেন, আমার সাংবাদিকতা জীবন শুরু দৈনিক সকালবেলার হাত ধরে। দৈনিক সকালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সৈয়দ এনামুল হক স্যারের কাছে এসে বল্লাম, স্যার আমি সাংবাদিকতা করতে চাই। একটা এসাইনমেন্ট দিলেন। আমি সেই এসাইনমেন্ট ভালোভাবে সফল করতে পারলাম না। তিনি রাগ না হয়ে আমাকে শিখালেন। কিভাবে সংবাদ সংগ্রহ করতে হয়, কিভাবে সংবাদ লিখতে হয়। তিনি আমাকে হঠাৎ ফোন করে বললেন, আনসারী তুমি অফিসে আসো। আমার পত্রিকায় কাজ করো। এখন থেকে তুমি নিউজের সব বিষয়ে দেখা-শোনা করবে। আমার অনুপস্থিতিতে তুমি দৈনিক সকালবেলার অনলাইন ও প্রিন্ট ভার্সনে যেসব নিউজ যাবে সব তুমি দেখবে।
অফিস সহকারী শারমিন আক্তার পলি বলেন, দৈনিক সকালবেলার পত্রিকার সাথে আমি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটানা কাজ করেছি, হাতে -কলমে শিক্ষা দিয়েছেন। অফিসে খাওয়া-দাওয়া কিংবা যেকোন অনুষ্ঠান হলেই স্যার আমাকে ডাকতেন। স্যার সৎ ও ভাল মানুষ ছিলেন।
স্টাফ রিপোর্টার তানজিনা আফরিন বলেন, দৈনিক সকালবেলার স্যারের সাথে আমি প্রায় ছয় বছর ধরে কাজ করছি। স্যারকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি, স্যার খুব ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি অফিসের কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেননি।
উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক স্টাফ রিপোর্টার মোঃ মুজিবুর রহমান, মফিজুল ইসলাম, মোঃ ফিরোজ আহমেদ, শিবলী হাসান, মেরিনা রেমি, লরিন আনসারী, নাফ আনসারী, মোর্শেদা মিতু, আইটি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ফরহাদ হোসেন, মোঃ বেলাল হোসেন, প্রিন্টের মোঃ আবুল হাসেমসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।