দেশে গত বছরের শেষ তিন মাসে বাড়িভাড়া ৫.৮৯ শতাংশ বেড়েছে। আগের বছর ২০২২ সালের একই সময়ে ভাড়া বেড়েছিল ৫.৮৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বাড়িভাড়া সূচকের (এইচআরআই) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। পাকা, আধাপাকা, কাঁচা ও ঝুপড়ি—এই তিন ধরনের বাড়ির ভাড়া নিয়ে বিবিএস হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুসারে, গত অক্টোবর-ডিসেম্বর কাঁচা ঘর বিভাগের ভাড়া সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। সূচক বেড়ে হয়েছে ১১২.৪৭। এটি এর আগের বছর একই সময়ের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ বেশি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬২৮ শতাংশ। গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া সংক্রান্ত জরিপে সংগঠনটি জানিয়েছিল, এ সময় বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ। একই সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ। অর্থাত্ এ সময়ে নিত্যপণ্যের দামের তুলনায় বাড়িভাড়া বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ।
সংগঠনটির অন্য এক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৫০ শতাংশ, ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ টাকা শুধু বাসাভাড়া পরিশোধে ব্যয় করে থাকে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাড়িভাড়ার উচ্চ প্রবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির ধারাবাহিক প্রভাবের বহিঃপ্রকাশ। এই বাড়তি খরচ কম আয়ের পরিবারগুলোর বোঝা দ্বিগুণ করে দেয়। কম আয়ের পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়ার দাবি খুবই বাস্তবসম্মত। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সক্ষমতা খুব কম।
ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি মো. বাহারানে সুলতান বাহার বলেন, ‘বাসাভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করতে আমরা বারবার সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। এ ছাড়া মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছি। তবু ভাড়াটিয়াদের কোনো কথাই শোনা হচ্ছে না।’