Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
দেশে এলে বিমানবন্দরেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল : প্রধানমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

দেশে এলে বিমানবন্দরেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্কঃ

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শতবাধা অতিক্রম করে ২০০৭ সালের ৭ মে আমাকে দেশে ফিরতে হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এমনকি আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেও দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়। দেশে এলে বিমানবন্দরেই মেরে ফেলা হবে, এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এ সব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনটা (৭ মে) আমার জীবনের অনন্য দিন, কারণ আমি সেদিন দেশে ফিরে এসেছিলাম শত বাধা অতিক্রম করে। আমাকে সেই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক উপদেষ্টাও ফোনে বলেছিল আপনি আসবেন না, আপনি বাইরে থাকেন, যা যা লাগে করব।

তিনি আরো বলেন, ‘সকল এয়ারলাইন্সকে নিষেধ করা হয়েছিল, আমাকে বোডিং পাস যেন না দেওয়া হয়। আমেরিকায় তিন ঘণ্টা এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে লন্ডন পর্যন্ত আসি।

লন্ডনে যেদিন আমি বিমানে উঠতে যাব উঠতে দেওয়া হয়নি। সেদিন আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যেভাবেই হোক আমি দেশে ফিরব। এমনকি আমি যখন এয়ারপোর্টে রওনা হই, তখন অনেকে আমাকে ফোনে বলেছে আপনি আসবেন না, আসলে আপনাকে মেরে ফেলে দেবে। আমি পরোয়া করিনি। তবে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী ভাইদের প্রতি।
তখন বলা হয়েছিল যে কেউ যেন এয়ারপোর্ট না যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমনকি আমার দলের ভেতর থেকেও। তখন দলের যিনি সেক্রেটারি ছিলেন তিনি সবাইকে বলে দিয়েছিলেন এয়ারপোর্টে গেলে তাকে বহিস্কার করা হবে। আর আমাদের নেতাকর্মী কেউ রাস্তায় থাকতে পারবে না। আমি শুধু একটাই মেসেজ দিয়েছিলাম সবাই থাকবে। আমরা গেরিলা যুদ্ধ করেছি, সবাই থাকবা, তবে ঘাসের সঙ্গে থাকবা, আমি বলেছিলাম আমার প্লেনটা না নামা পর্যন্ত, আমি দরজা খুলে না বের হওয়া পর্যন্ত তোমরা বের হবে না।’আমাকে বলা হয়েছিল, আমি গাড়িতে উঠলে আমাকে একটা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ড্রাইভারকে বলেছিলাম যেদিকে মানুষ যাচ্ছে সেদিকে যাবা, ফ্লাইওভারের উপরে উঠবা না। হাজার হাজার মানুষ তখন রাস্তায়। আমার দলের কিছু লোকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শুধু সংবর্ধনা শুধু নয় আমাকে নিরাপত্তাও দিয়েছে নেতাকর্মীরা। সেই সময় কালে ভদ্রে দু-এক জন আমার কাছে আসতে পারত। সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ, আমি গেরিলা কায়দায় বেরিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশের চোখ এড়িয়ে আমি হাসপাতালে যাই। সেদিন সেখানে আমি খুব কড়া কথা বলি, আমি বলেছিলাম সে সময় দেশ চালাচ্ছে কে? পরের দিন সকালে পুলিশ এসে হাজির। আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে সংসদ ভবনের এক পরিত্যক্ত নোংরা ভবনে। সেখানেই আমাকে বন্দী করে রাখা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু এই দিন নয়, ৮৩ সালেও এরশাদ সাহেবও আমাদেরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল ৩০ হেয়ার রোডে লাল দালানে। সেখান থেকে ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যায় ইনট্রোগ্রেট করতে। এরশাদ সাহেব আমাকে আরো কয়েকবার গ্রেপ্তার করে। আমি মতিয়া আপা, সাহারা আপা (এখন নেই) আমাদের তিনজনকে এক সঙ্গে নিয়ে যায় কখনো কন্ট্রোলরুমে সারা রাত বসিয়ে রাখে। শুধু তাই নয় ,বার বার গ্রেপ্তার সরাসরি গুলি বোমা গ্রেনেড সব কিছু অতিক্রম করে আজকে এখানে এসে জনগণের সেবা করতে পারছি। এখন আমি শুধু দাঁড়িয়েছি, বাংলাদেশের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাতে, দলের নেতাকর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানাতে।’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৮১ সালের ১৭ মে আমি এসেছিলাম ৬ বছর পরে। এরপর ২০০৭ সালে ৭ মে আমি আবারও সব উপেক্ষা করে ফিরে আসি। বাবা-মা আমাদেরকে শিখিয়েছিলেন সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলা। জনগণের জন্য কাজ করা। তাই করছি। দেশের মানুষই আমার একমাত্র শক্তি এবং প্রেরণা, সেই শক্তি নিয়েই আমি এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আর সবচেয়ে বড় কথা আমি যখন বন্দি ছিলাম আমার ছোট বোন রেহানা সে রাজনীতি করে না, সামনে নেই কিন্তু সে অসাধ্য সাধন করতে পারে। প্রত্যেকটা জেলা, উপজেলা সব নেতাকর্মী সকলের সাথে যোগাযোগ করেছে। ওই লন্ডনে বসেই সে কাজ করেছে।’

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply