অনলাইন ডেস্ক:
দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার মতো যোগ্য হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য নবীন সেনা অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি প্যারেড ডিসেম্বর-২০২০ এবং ৭৯ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে-বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষ থাকবে, উপযুক্ত থাকবে এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে, বিশ্বের যেখানেই যাবে সেখানেই যেন দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে পারে, সেদিকে সর্বদা সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার কাঙ্ক্ষিত ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে সার্বিকভাবে কাজ করা হচ্ছে এবং সেই লক্ষ্যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে উন্নয়নের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালে বিশ্বে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। সেই সময় দেশ পরিচালনায় আরো উঁচু মানের অফিসার হিসেবে আজকের যারা নবীন সেই তোমরাই দায়িত্ব পালন করবে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এই ভূখণ্ড একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং জাতির পিতার এই স্বপ্ন আমরা পূরণ করব, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমাদের সেনাবাহিনী প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে এবং দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করছে।’
করোনাকালকে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বের জন্য ‘ক্রান্তিকাল’ আখ্যায়িত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ফলে অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ছে, জীবনযাত্রা সীমিত হয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষের জীবনে দুর্ভোগ আসছে। তবে এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন করা, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং সাহায্য করায় বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে।’
এ সময় তিনি সেনাবাহিনীকে ‘জনগণের সেনাবাহিনী’ আখ্যায়িত করে আরো বলেন, ‘যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় বা যেকোনো সমস্যায় আমি দেখেছি, আমাদের সেনা সদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিভিন্ন কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য নবীন ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার মাহমুদুল হাসান শ্রেষ্ঠ চৌকস ক্যাডেট হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করায় ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণ পদক’ও অর্জন করেন। অনুষ্ঠানে নবীন ক্যাডেটদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়। প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয় এবং প্রধানমন্ত্রী নবীন ক্যাডেটদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।