Sunday , 24 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের তাণ্ডব

দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের তাণ্ডব

অনলাইন ডেস্ক:

হেফাজতে ইসলাম হরতাল ডেকে গতকাল রবিবার আবার দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালিয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টানা তৃতীয় দিনের মতো তাণ্ডব চালিয়েছে মাদরাসাছাত্ররা। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আগুন দিয়েছে তারা। এ ছাড়া জেলার সরাইলেও হামলা-ভাঙচুর চালান হেফাজতের কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া রাজধানীর উপকণ্ঠ নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালানোর খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে শুক্রবার থেকে হেফাজতে ইসলাম তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। গত শুক্রবার ঢাকায় বিক্ষোভের সময় সংঘাতের ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হামলা-ভাঙচুর চালায় হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা। সেখানে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়। এর প্রতিবাদ জানাতে ওই দিন বিকেলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তায় নামেন হেফাজতের কর্মীরা। তাঁরা রেলস্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন এবং শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালান। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় একজন। হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণাবাড়িয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল হরতাল ডাকে হেফাজত। এর আগে শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুর চালান সংগঠনের কর্মীরা। ওই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বাইরে চারজন এবং শহরে একজন নিহত হয়। গত তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে সংঘাতের ঘটনায় ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রানা নুরুল শামস গতকাল তিনজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের মধ্যে আছে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাঁটিহাতা গ্রামের আলতাব আলীর ছেলে হাদিস মিয়া ওরফে কালন মিয়া (২৩) ও সরাইল উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া গ্রামের সুফি আলীর ছেলে আল আমীন (১২)। এ দুজন সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে সংঘর্ষে মারা যায়। জেলা সদরে নিহত অন্য আরেক যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

kalerkanthoএ ছাড়া দুপুর পর্যন্ত ২৭ জন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় বলে জানা গেছে।

গতকাল সারা দেশে হেফাজতের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচিতে জনজীবন স্বাভাবিক ছিল। দিনের শুরুতে যানবাহন কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে রাজপথে ফিরে আসে স্বাভাবিক চিত্র। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল সবখানে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় হরতালের বিপক্ষে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। বিরোধী অবস্থানেও তৈরি হয় উত্তেজনা।

হরতালের নামে তাণ্ডব চালানোর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, হরতালে জানমাল রক্ষার্থে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি-গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী দাবি করে বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হয়েছে। সারা দেশের জনগণ ও আলেমরা এতে সাড়া দিয়েছেন।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত নেতাকর্মীরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা পরিষদ কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন, প্রেস ক্লাব, পৌর মিলনায়তন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, পুলিশ লাইন, সদর থানা, খাঁটিহাতা বিশ্বরোড হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়ি, দক্ষিণ কালীবাড়ি, রেলওয়ে স্টেশন, জেলা আওয়ামী লীগ ও সংসদ সদস্যের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, গ্যাস ফিল্ড কার্যালয়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের কার্যালয়, তাঁর নিজের ও শ্বশুরবাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পাঠাগার, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে আয়োজিত উন্নয়ন মেলার অর্ধশত স্টল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী আফজাল হোসেন নেসারের বাড়ি, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আনার, জামাল খানের বাড়ি, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার কার্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন।

এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইন, আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং সরাইলের খাঁটিহাতা বিশ্বরোড হাইওয়ে থানায় হামলা চালায় হরতাল সমর্থনকারীরা। টোল আদায়ের বুথ ভাঙচুর করা হয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি গাজী শাখাওয়াত হোসেন জানান, হঠাৎ করে থানায় হামলা হয়।

হেফাজতের কর্মীদের হাতে সাধারণ লাঠিসোঁটা দেখা গেলেও গতকাল জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট পরা অনেক যুবককে দা, হকিস্টিকের মতো দেশীয় অস্ত্র হাতে দেখা গেছে।

হরতালকারীরা নালার কংক্রিটের স্ল্যাব তুলে এনে রেললাইন অবরোধ করায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্টেশনের কাছের রেলগেটের ব্যারিয়ার বাঁকা করে ফেলা হয়। রেললাইন থেকে ক্লিপ খুলে ফেলা হয়। তালশহর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের মাঝখানে একটি সেতুতেও আগুন দেওয়া হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রেস ক্লাবের সভাপতি দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রিয়াজউদ্দিন জামির ওপর হামলা করা হয়।

রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের বিরতিহীন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে পৌঁছলে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এতে ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচের কাচ ভাঙচুর হয়। ট্রেনটি ফিরিয়ে ভৈরবে নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে সিলেটগামী পারাবত ও একটি মালবাহী ট্রেন বিরতি ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনের ওপর দিয়ে যায়। সোনার বাংলা ট্রেনে হামলা হলে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যে কারণে চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর এক্সপ্রেস নরসিংদী, ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস কসবা, কালনী এক্সপ্রেস আজমপুর, বিজয় এক্সপ্রেস কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখী তিতাস কমিউটার নরসিংদীর জিনারদী স্টেশনে আটকা পড়ে।

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির সাজিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, শনিবার সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিল থেকে বিনা কারণে মাদরাসাছাত্রদের ওপর হামলা চালানো হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দেয়।

ঢাকায় যাত্রাবাড়ী, পল্টন, শাহবাগ, নীলক্ষেত, লালবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমণ্ডি, শুক্রাবাদ, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, মহাখালী, উত্তরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৬টা থেকে যান চলাচল কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। শহরের মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে। লালবাগ, পল্টন, বায়তুল মোকাররম মসজিদ, মোহাম্মদপুর, বসিলা, সাতমসজিদ রোড ও ভাটারার প্রগতি সরণি এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছেন হেফাজতের কর্মীরা। দুপুরে পল্টনে হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। সংঘর্ষের পর পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বায়তুল মোকাররম এলাকায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হেফাজতকর্মীরা অবস্থান করলেও ওই এলাকায় কিছু সময় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়। লালবাগে হরতাল সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। সকালে বসিলা ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে হরতালকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সাতমসজিদ রোডে সকাল ১১টার দিকে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ, ধাওয়াধাওয়ির ঘটনা ঘটে।

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, হেফাজতের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, সানারপাড়, মৌচাক, পাইনাদি, শিমরাইল ইউ টার্ন এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন। টায়ার, গাছের গুঁড়ি, বাঁশ, কাঠ, চৌকি, বেঞ্চসহ বিভিন্ন আসবাবে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। মহাসড়কে টহলে ছিল র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সাজোয়া যান ও জলকামান। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে গেলে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় মোল্লা মার্কেটের দোকান কর্মচারী শাকিল হোসেন (৩২), ডা. শফিকুল ইসলাম (৫৩), গাড়িচালক মানিক (৩০), শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন (১৬), কাভার্ড ভ্যানচালক রাসেল (৩০), হেলপার রাকিব (২০), রাজমিস্ত্রি নুর মোহাম্মদ (২৬) এবং মৌচাক এলাকার পথচারী হৃদয়কে (২১) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দিনে হেফাজতের কর্মীরা একটি বাস, একটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি ট্রাকে আগুন দেন। এ ছাড়া অ্যাম্বুল্যান্স, সংবাদমাধ্যমের গাড়িসহ অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে হঠাৎ হামলা চালান হেফাজতকর্মীরা। এ সময় দুটি ট্রাক, একটি মাইক্রোবাস ও দুটি মিনিবাসে আগুন দেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ফাঁকা গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছেন।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সকালে হেফাজতের নায়েবে আমির হামিদের নেতৃত্বে একটি মিছিল ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করতে চাইলে সিরাজদিখানের নিমতলা-রাজানগর সড়কের শিকারপুর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সিরাজদিখান থানার ওসিসহ শতাধিক আহত হয়। এ সময় সাতটি বাড়ি ভাঙচুর ও চারটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

রাজশাহীতে সকালে নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় ট্রাক টার্মিনালের ভেতরে রাখা দুটি বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

কিশোরগঞ্জে দুপুরের দিকে শহীদী মসজিদের সমানে থেকে হেফাজতের কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণের সময় হঠাৎ লাঠিসোঁটা নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালান। তাঁরা কার্যালয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুলসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে।

সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্ট দুপুরে হেফাজত ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং তিন দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই ছাত্রলীগ কর্মীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। সিলেট থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস।

চট্টগ্রাম নগরের পাশের উপজেলা হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (বড় মাদরাসা) মাদরাসা ও আশপাশের সড়ক, রেলপথ এলাকায় হরতাল সমর্থকরা সক্রিয় ছিল। তবে কর্মসূচি শুরুর আগে শনিবার রাতে হাটহাজারী বড় মাদরাসার বিপরীতে উপজেলা ডাকবাংলোয় আগুন দিয়েছেন হেফাজত নেতাকর্মীরা। পুলিশ জানায়, আগুনে দুটি মোটরসাইকেল পুড়ে যাওয়াসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নোয়াখালীতে হেফাজতের হরতালের মিছিল থেকে চৌমুহনী চৌরাস্তায় নোয়াখালী টিভি সাংবাদিক ফোরামের কার্যালয় ও দোকানপাটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। হামলায় একাত্তর টিভি ও জাগো নিউজের নোয়াখালী প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, বাংলা টিভির নোয়াখালী প্রতিনিধি ইয়াকুব নবী ইমনসহ কয়েকজন সংবাদকর্মী আহত হন। 

নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড় অবরোধ করেন হেফাজতকর্মীরা।

কঠোর হুঁশিয়ারি : গতকাল সচিবালয়ে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, হরতালে জানমাল রক্ষার্থে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাশকতার চেষ্টা করা হচ্ছে। এগুলো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। হেফাজতের পেছন থেকে অন্য কেউ উসকানি দিচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. শরীফ মাহমুদ অপু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সব ধরনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। অন্যথায় জনগণের জানমাল ও সম্পদ রক্ষায় সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply