জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত-সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ সমাজই হবে এর মূল কারিগর। দ্বাদশ সংসদের মেয়াদকালে দেশের উন্নয়ন ইতিহাসে নতুন ধারা সৃষ্টি হবে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের শুরুতে সভাপতিত্ব ও বিদায়ী ডেপুটি স্পিকার হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, বর্তমান জাতীয় সংসদ উন্নয়নের এ ধারাকে আরো এগিয়ে নেবে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে তরুণ সমাজকে ধূমপান ও মাদকমুক্ত, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা এবং কর্মক্ষম সুস্থ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, গণতন্ত্রে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নানান প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। একই সঙ্গে নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন।
এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয় মহান সংসদকে আরো সরব ও প্রাণবন্ত করে তুলবে। সংসদে বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ গণতান্ত্রিক যাত্রাকে আরো বেগবান করবে।
নির্বাচনি পরিবেশ, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সন্তুষ্টি এবং বিদেশিদের স্বীকৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনি পরিবেশ দেখে দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জনগণের বিশাল ম্যান্ডেট নিয়ে টানা চতুর্থবার এবং সর্বমোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ইতোমধ্যে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্বের উন্নত ও গণতন্ত্রমনা দেশ এবং আরব দেশগুলোর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানোসহ শান্তি, গণতন্ত্র ও টেকসই উন্নয়নে বর্তমান সরকারের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বিগত সংসদগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকারের অর্জন সম্পর্কে শামসুল হক টুকু বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ স্বপ্নের সোনালি অধ্যায় অতিক্রম করছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্ব সমাজে প্রশংসিত। খাদ্য, নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইনের শাসন, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে অর্জিত হয়েছে বিস্ময়কর সাফল্য। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও সংবিধানে স্বীকৃত জনগণের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রাপ্তি সবার জন্য নিশ্চিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কক্সবাজার ও পদ্মারেল সংযোগ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ইতোমধ্যে জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
সারা দেশের ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, সুন্দর, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে সুসংহত করেছেন। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার নিজ নির্বাচনি এলাকা পাবনা-১ এর সকল জনগণ ও ভোটারদের। যারা আমাকে নির্বাচিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে শহীদ হওয়া তাঁর পরিবারের সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ডেপুটি স্পিকার।