কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
একজন আনোয়ার আলী। তার রাজনীতির বয়স ৬০ বছরের উপরে। নানা দুঃসময়ে যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নানা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। মেয়র হিসেবে কুষ্টিয়া পৌরসভার নাগরিকদের সেবা করছেন টানা কয়েক যুগ। আধুনিক কুষ্টিয়া ও বসবাসযোগ্য শহর গড়তে যিনি সারাটা দিন ব্যায় করেন। নাগরিকদের কাছেও তিনি সম্মানের পাত্র। জীবনের শেষ সময়ে এসে বর্ষিয়ান এ নেতা ফের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। এতে তার আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শক্তি বেড়েছে। বাকি সময়টা পৌরবাসীর সেবা করে কাটাতে চান। গড়তে চান আধুনিক এক কুষ্টিয়া।৭৮ বছর বয়সী মেয়র আনোয়ার আলী এবার দলীয় মনোনয়ন পাবেন কি-না যে প্রশ্ন রেখেছিলেন অনেকে। দলের অনেকেই চেষ্টা করছিলেন তাকে পেছনে ফেলে পৌরসভায় মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে। তবে দলীয় সভানেত্রী শেষ পর্যন্ত মেয়র আনোয়ার আলীকেই বেছে নিয়েছেন। তাকেই দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রসঙ্গে মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকেই ফের দলীয় মনোনয়ন দিবেন। যতদিন তিনি আছেন আর আমি বেঁচে আছি তিনি আমাকেসম্মানিত করবেন। আমিতো দলীয় মনোনয়ন চাইনি। তারপরও তিনি আমাকে ভালবেসে মনোনয়ন দিয়েছেন। এ জন্য মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া ও নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা।আনোয়ার আলী বলেন, মনোনয়নের প্রথম খবরটি দেয় আমির হোসেন আমু। তিনি আমাকে মোবাইল করে খবর দেন। আমু আমার রাজনৈতিক গুরু। তিনি আমাকে স্নেহ করেন। খবরটি জানার পর আমার মানসিক শক্তি বেড়ে যায়। বেশ উদ্দীপনা লাগছে। আবার কাজের সুযোগ পাবো জনগন নির্বাচিত করলে। কেমন পৌরসভা গড়তে চান জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ আমিতো নতুন মেয়র না। দীর্ঘ সময় মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। কুষ্টিয়া শহরকে বসবাস যোগ্য করতে নানা প্রকল্পবাস্তবায়ন করেছি। সড়ক ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করেছি।বস্তিগুলোর উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে চিত্র পাল্টে গেছে। বস্তির মানুষ এখন ধুনিক সুবিধা ভোগ করছে। তাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করছে। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে। নতুন এলাকার জন্য অনেক কিছু করতে চেয়েছিলাম। তবে অনেক কাজ বাকি আছে। আল্লাহ সুযোগ দিলে অনেক কাজ দৃশ্যমান হবে।এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার আলী বলেন- আমি কোন ঠকবাজি কাজে বিশ্বাসী নয়। যতটুকু করতে পারবো ততটুকু আশ্বাস দিয়ে থাকি। মেয়রের চেয়ারে বসার পর আমার কোন দল নেই। আমি নাগরিক হিসেবে সবার কাজ করি। আর এ জন্য মানুষ আমাকে ভালবাসে। আমাকে ওয়ামীলীগ যেমন ভোট দেয় বিএনপির অনেকেই ভোট দেয়। আমি সবার মেয়র। কেউ কাজ নিয়ে আসলে আমি সেই কাজ করে দিয়ে থাকি। কাউকে হয়রানী করা আমার কাজ নয়। আমার মত এত বয়সী মেয়র আর দেশের কোন পৌরসভায় আছে বলে জানা নেই। আমার সমবসয়ী অনেক বন্ধু মারা গেছে। করোনা হওয়ার পর আলাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এ জন্য শুকরিয়া তার দরবারে। হয়তো মানুষের ভালবাসার কারনে আল্লাহ আমাকে নতুন হায়াত দান করেছেন। তাই বাকি সময় জনগনের জন্য কাজ করে যেতে চাই।
মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, এবার নির্বাচিত হলে প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ সংরক্ষন করার পাশাপাশি বৃদ্ধদের জন্য আশ্রম ও কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল ও তাদের শিশুদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার করার ইচ্ছা আছে।
ভাল পৌরসভা গড়তে হলে নাগরিকদের সচেতন হতে। নাগরিকরা সচেতন হলে শহর বদলে যাবে। সৌন্দর্য্য বন্ধনের পাশাপাশি সড়কগুলোকে আরো প্রশস্ত করার কথা জানান তিনি। পাশাপাশি যানজট নিরসনে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন মেয়র।
কুষ্টিয়াকে দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা ও উন্নত পৌরসভা দাবি করে মেয়র বলেন, আমার কোন বেতন বাকি নেয়। সেবা দেয়ার মত সব সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। আমাদের অনুসরন করে অনেক পৌরসভা। আমাদের সেবা যাতে আরো দ্রুত মানুষ পায় সেজন্য উদ্যোগ নেয়া হবে গামীতে। পৌর নাগরিকদের জন্য সেবার আওতা বাড়ানোর কাজও করা হবে আগামীতে। তবে এখনো সাধ্যমত সেবা দিতে হয়তো আমরা পারছি না। এ জন্য কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আগের চেয়ে সেবা বেড়েছে। শহরের বেশ কয়েকটি সড়ককে প্রশস্ত করে সেখানে বৃক্ষ রোপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সবুজ কুষ্টিয়ার গড়ার উদ্যোগ হিসেবে এ কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। বিশেষ করে পিটিআই সড়ক প্রশস্ত করা হবে। মরা গড়াই খাল খনন নিয়ে বলেন- খাল খননে আমাদের অভিজ্ঞতা না থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছে। নতুন করে আবার খননের উদ্যোগনেয়া হবে। এ জন্য জিকের সহযোগিতা নেয়া হবে। কারণ তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে।’ ভাল পরিষদ চালাতে হলে ভালো লোকের প্রয়োজন বলেও জানান। গত পরিষদ চালাতে গিয়ে অনেক সময় কাউন্সিলররা বাঁধা দিয়েছে। তবে তাদের বুঝিয়ে অনেক কাজও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিরোধিতা থাকবেই, তারপরও কাজ করে যেতে হবে। মেয়র বলেন নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ভালবাসেন। তিনি আমার খোঁজও নেন। দেশকে সঠিক পদে