চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: সেভ এজ ইওর আর্ন (এসএওয়াইএ)’ সমিতির নামে মোটা অংকের ঋণ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ভিক্ষুক-প্রতিবন্ধীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগরীর হামজারবাগ এলাকা থেকে কথিত এক নারী এনজিও কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জান্নাতুল নাঈমা (৩৩) নামে ওই নারীকে আটক করার খবর পেয়ে গতকাল সোমবার রাতে প্রতারিত শত শত নারী পুরুষ নগরীর সিএমপির পাঁচলাইশ থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় নিজ অফিসে এ নারীকে ঘেরাও করে অবরুদ্ধ করে রাখে প্রতারণার শিকার এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে জনগণরোষে থেকে উদ্ধার করে থানায় এনে আটক করে।
পুলিশ জানিয়েছে, জান্নাতুল নাঈমা হামজারবাগ এলাকায় নিজের বাড়িতে ‘সেভ এজ ইওর আর্ন (এসএওয়াইএ)’ নামে একটি এনজিওর প্রধান বলে দাবি করেছেন। তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রতিজন মানুষকে অনুদান দিবে আশ্বাস দিয়ে টোকেনের মাধ্যমে ২০০ টাকা করে জমা নেয় প্রায় ১৪ হাজার মানুষ থেকে । যার বিপরীতে জমাদানকারীরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ৪০০০ টাকা করে অনুদান পাবেন বলে আশ্বস্থ করেন। মানুষকে বিশ্বাস করাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর উপ-পরিচালকের ত্রাণ-১ শাখার উপসচিবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেও বানিয়েছেন একটি খসড়া। যেখানে কিভাবে এনজিওটিতে টাকা দেবে সরকার আর পরে তা দেয়া হবে জমাদানকারীদের তার সবই লেখা আছে। সময় পার হতে থাকলে ক্ষণে ক্ষণে জমাদানকারীরা টাকা চাইতে অফিসে গেলেই দিতেন হুমকি ধমকিও। বলতেন টাকা আসলেই ফোন করা হবে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর জানান, এসএইওয়াইএফ নামে সংস্থাটি এনজিওর আদলে পরিচালনা করেন জান্নাতুল নাঈমা। সেখানে তার অধীনে আরও লোকজন কাজ করেন। তারা মূলত ব্যাংকের মতো করে টাকা জমা নেন, এর বিপরীতে অনুদান ও ক্ষুদ্রঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে সংস্থাটির এনজিও হিসেবে কোনো সরকারি অনুমোদন নেই।
ওসি জানান, ‘ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী ভাসমান লোকজন, গৃহকর্মী, নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র, খেটে খাওয়া লোকজনের কাছ থেকে সংস্থার লোকজন টাকা সংগ্রহ করে। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, করোনার শুরুতে তারা সংস্থার কার্যক্রম শুরু করে। হামজারবাগসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় ১৩ থেকে ১৪ হাজার লোকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করেছে। অনুদান-ক্ষুদ্রঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কেউই পাননি। বরং অফিসে ধর্ণা দিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছে।