অনলাইন ডেস্ক:
তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন চীনের স্টেট কাউন্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। আজ শনিবার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
২৪ ঘণ্টার কম সময়ের এ সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাঁর সম্মানে শনিবার নৈশ ভোজের আয়োজন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ সফরে পাঁচ থেকে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর ও নবায়নের প্রস্তুতি চলছে। আগামীকাল রবিবার সকালে প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি ঢাকা ছাড়বেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চীনের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতেই এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সফরে কী বার্তা নিয়ে আসছেন এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, আসার পর বোঝা যাবে। তবে এ সফরে আলোচনায় তাইওয়ান প্রণালি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি গুরুত্ব পেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ইঙ্গিত দিয়েছেন। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং গত বৃহস্পতিবার তাইওয়ান ইস্যুতে এক বিবৃতিতে ‘এক চীন’ নীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। একই সঙ্গে তিনি আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি রক্ষায় চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
এরপর বাংলাদেশ ‘এক চীন’ নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সফরে তাইওয়ান প্রণালির পরিস্থিতি তুললে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরতে পারে।
এদিকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতেও আলোচনা হতে পারে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চার দেশীয় নিরাপত্তা জোট কোয়াডের ব্যাপারে চীনের উদ্বেগ আছে। কোয়াড সম্প্রসারিত হলে বাংলাদেশ যদি তাতে যোগ দেয় তাহলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে বলে বেইজিং ঢাকাকে সতর্ক করেছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাই এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশকে ওই দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কৌশলগত ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বেইজিংয়ের ভূমিকার ওপর জোর দেবে। এর আগে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে মন্ত্রিপর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হলেও এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে হলেও বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা চাইতে পারে।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন