Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ সব মহাসড়কে টোল আদায়ের নির্দেশ  প্রধানমন্ত্রীর
--ফাইল ছবি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ সব মহাসড়কে টোল আদায়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক:

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেকে) অনুমোদন পাওয়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ দেশের সব মহাসড়কে টোল আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি টোল আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট সড়কে ইয়ারমার্ক অ্যামান্ট করারও নির্দেশ দেন। গতকাল মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মোড়ক উন্মোচন করেন। আগামী পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করবে সরকার। সভা শেষে রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকের সামনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিনা পয়সায় সেবার দিন শেষ। আমাদের এমন মনোভাব, সব কিছুর সেবা চাই, কিন্তু পয়সা দিতে রাজি না। বিশেষ করে যাদের পকেটে পয়সা আছে, তারা দেয়ই না। এটা আমাদের কালচার, এ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। প্রধানমন্ত্রী চান, বড় বড় সড়ক যেগুলো নির্মাণ করছি, এগুলো থেকে আমরা টোল আদায় করব। এই টোল আদায় করে শুধু সরকারের রাজস্ব আদায়ের জন্য নয়, যাতে ওই সড়কগুলোর মেরামতে এই টাকা ব্যয় করা যায়’—এ কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

একনেকে উপস্থাপিত একটি প্রকল্পের অনুমোদন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘হালদা নদীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সতর্ক হতে হবে। যাতে মা মাছের কোনো ক্ষতিসাধন না হয়। এ বিষয়ে মৎস্যবিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘নদীগুলোতে ড্রেজিং করতে হলে কাজ শুরু হলে যাতে শেষ পর্যন্ত করা হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মাঝপথে কাজ বাকি রেখে চলে যাওয়া যাবে না।’ আর একটি প্রকল্প অনুমোদন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কাজুবাদাম ও কফি চাষের সম্প্রসারণ করতে হবে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি মঙ্গলবারের জন্য অপেক্ষা করি। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের জন্যও অপেক্ষা করে থাকি, কিন্তু তার চেয়েও বেশি অপেক্ষা করি মঙ্গলবারের একনেকের জন্য। কেননা এ বৈঠকেই বাংলাদেশের উন্নয়নসহ আশা-আকাঙ্ক্ষা—সব কিছু নির্ভর করে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘যা ব্যয় হওয়ার তা-ই হচ্ছে। সব কিছুর দাম বাড়ছে। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে, নির্মাণ করা হবে ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজ থাকবে। থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস। পাঁচ কিলোমিটার উড়াল সড়ক থাকবে। এসব কারণেই ব্যয় বাড়ছে। সড়ক থেকে ইকোনোমিক্যালি রিটার্ন আসবে। ভালো কিছু পেতে হলে দাম দিতে হবে। ছোট মন দিয়ে বড় কাজ হয় না। আমাদের সরকারের মন বড়। সরকার বড় মন নিয়ে দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করতে উন্নয়ন করছে। সরকার এখন তিন গুণ দাম দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করছে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘জীবনের শেষ বেলায় এসে এই কাজে আমি শামিল হতে পেরেছি বলে নিজেও গর্ববোধ করছি। যে কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রকাশ্যে প্রশংসা করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, আগে একনেক বৈঠক সময়মতো হতো না।’

৯ প্রকল্প অনুমোদন : সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডরসহ ৯ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৮৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ছয় হাজার ৫৯৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে বিটিসিএলের ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ প্রকল্প। সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। বাংলাদেম বেতার, সিলেট কেন্দ্র আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সম্প্রচার যন্ত্রপাতি স্থাপন প্রকল্প। পশ্চিম গোপালগঞ্জ সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। চট্টগ্রাম জেলাধীন হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন থেকে বিভিন্ন এলাকায় তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্প। ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলাধীন দৌলতখান পৌরসভা ও চকিঘাট এবং অন্যান্য অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙন রক্ষা প্রকল্প। কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন প্রকল্প।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply