ঢাকার বাসগুলোর দিকে তাকানো যায় না, এটা লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আপনারা এই লজ্জাটা থেকে একটু বাঁচাবেন। এসব বাস চোখের সামনে চলে আপনাদের কি লজ্জা লাগে না। ঈদ উপলক্ষে লোক দেখানোর জন্য নয়, সত্যি সত্যি গাড়িগুলো ঠিক করুন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাস মালিক ভাইদের বলবো, ফিটনেস নিয়ে বাসগুলো রাস্তায় বের করবেন।
সড়ক দুর্ঘটনা ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন কোন প্রকল্প গ্রহণ করিনি। কিন্তু ইদানিং একটা প্রকল্পে গ্রহণ করেছি। এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন দ্রুত করতে হবে। এ ব্যাপারে মনযোগী হতে সচিব সাহেবকে আমি বারবার বলেছি।
সড়কের সবচেয়ে বড় উৎপাত তিন চাকার গাড়ি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখানে একটা নীতিমালা করা দরকার। আই এম সরি টু সে, আমার মনে হয় আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে যে কোন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হয় না। হাইওয়ে পুলিশের ক্ষমতা আরো বাড়াতে হবে। ২২টি সড়কে তিন চাকার যান নিষিদ্ধ। কিন্তু এসব সড়কে তিন চাকার যান চলছে। হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়াতে না পারলে আমরা যত সিদ্ধান্তই নিয়ে তা কার্যকর করা কঠিন।
হানিফ ফ্লাইওভারে টোল বন্ধের প্রস্তাব
সভায় কিছু দিনের জন্য হানিফ ফ্লাইওভারে টোল বন্ধের প্রস্তাব করেছেন শ্রমিক নেতা ও সংসদ সদস্য শাহজাহান খান। তিনি বলেন, ঈদের সময় এই ফ্লাইওভারে অনেক যানজট তৈরি হয়। বিশেষ করে টোল প্লাজায় যানজটের সূচনা হয়। তাই ঈদের সময় তিন থেকে সাত দিন টোল নেওয়া বন্ধ রাখা যেতে পারে। এটা আমার প্রস্তাব।
পরিবহনের চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাঁদা আর চাদাবাজি এক না। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে টাকা নেওয়া হয় সেটা চাঁদা। এটা খুবই অল্প পরিমাণ। আর যেটা জোর করে আদায় করা হয় সেটাকে চাদাবাজি বলা হয়। আমরা চাঁদার পক্ষে কিন্তু চাদাবাজির পক্ষে নই।
শাহজাহান খান বলেন, লক্ষ লক্ষ মোটরসাইকেল ঈদের সময় ঢাকা ছাড়ে। মোটরসাইকেলগুলো প্রায় ৪০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটায়। কোন গবেষণা ছাড়াই সবাই বলে দেয় বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে ট্রাক বাস দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু এটা গবেষণা করে দেখা দরকার। মোটরসাইকেল চালকদের লাইসেন্স থাকে না। একটি মোটরসাইকেলের তিনজন করে ওঠেন। এমনকি তাদের হেলমেটও থাকে না।
যেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ
ঈদ যাত্রায় সড়কপথে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির কারণ হতে পারে তীব্র যানজট। এরই মধ্যে সারা দেশে ১৫৫টি তীব্র যানজটপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তবে সভায় এই সংখ্যা কমিয়ে আনতে বলেছে সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তবে ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন মহাসড়কগুলোতে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে অতি জরুরি পণ্যবাহী যান চলতে পারবে। সব ফিলিং স্টেশন ঈদের আগে সাত দিন ও পরের পাঁচ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। ঈদের এই সময়ে পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।