Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
টিকা সংরক্ষণের জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে
--প্রতীকী ছবি

টিকা সংরক্ষণের জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক:

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকা আমদানি এবং তা জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্লোবাল ফান্ডের সমন্বিত কোভ্যাক্স গ্রুপ থেকে টিকা আনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এরই মধ্যে। এসব টিকা দেশে আনার পরে তা সংরক্ষণ, বিতরণ ও প্রয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে কর্মপরিকল্পনার চূড়ান্ত খসড়া। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান বা এলাকায় টিকা দেওয়া হবে,সেগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকা এবং সারা দেশে যে স্টোরগুলোতে টিকা সংরক্ষণ করা হবে, সেগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে। টিকা সরবরাহের জন্য যে পরিবহন ব্যবহার করা হবে, সেই পরিবহনও এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এরই মধ্যে দেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের জন্য টিকা সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। আপাতত ওই দুই উৎস থেকে নিশ্চিত করা টিকা চলতি বছরের মধ্যে পাবে দেশের মানুষ। এর মধ্যে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার তিন কোটি ডোজ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনার জন্য চুক্তি করেছে সরকার।

জানা গেছে, সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যমান টিকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাকেই কাজে লাগানো হবে করোনার টিকা রাখার জন্য।

সেগুলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকার বাইরে সংরক্ষণব্যবস্থা দেখতে বেরিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কোভ্যাক্স থেকে আসা টিকার জন্য বিমানবন্দর এলাকায় বিএডিসির হিমাগার ভাড়া নেওয়া হবে। সেরাম থেকে আসা টিকা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে বেক্সিমকোর নিজস্ব পরিবহনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (টিকাদান কর্মসূচি) ডা. শামসুল হক বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও টিকা সংগ্রহের বিষয়গুলোর সমাধান হয়েছে। সেই সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের অন্যান্য বিষয়ও আমরা ঠিকঠাক করার জন্য কাজ করেছি। যাদের টিকা দেওয়া হবে এবং যাঁরা এই টিকা দেবেন তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন আমরা কাজে নামব টিকাদানকর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং স্টোরগুলো চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করার জন্য।’

গতকাল শুক্রবার ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ আমি নিজেই চট্টগ্রামে এসেছি প্রস্তুতিকাজের অংশ হিসেবে।’ তিনি বলেন, ‘সেরাম থেকে বেক্সিমকো যে টিকা নিয়ে আসবে, সেগুলো তারা তাদের দায়িত্বে তাদের স্টোরে রাখবে। আর পরিবহনের জন্য গাড়িও তারা তৈরি করেছে। কোভ্যাক্স গ্রুপ থেকে যে টিকা আসবে, সেগুলো রাখার জন্য বিমানবন্দরে বিএডিসির দুটি কোল্ড স্টোরেজ (হিমাগার) আমরা ভাড়া নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সেখানে এক কোটির ওপরে টিকা রাখা যাবে। আর জেলা পর্যায়ে স্টোরেজগুলো এরই মধ্যে প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও কিছু কিছু প্রস্তুত করা হচ্ছে।’

টিকা সংগ্রহের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল বলেন, ‘টিকা সংগ্রহের বিষয়ে আমরা এখন আর মোটেই পিছিয়ে নেই। আমরা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকা আনার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেলেছি। কোভ্যাক্স থেকেও আমাদের টিকা আসা নিশ্চিত। এখন চীন ও ভারতের টিকার আমাদের দেশে ট্রায়ালের বিষয়ে কাজ চলছে। আবেদন করার পরে আমরা তাদের কাছে আরো কিছু জানতে চেয়েছি। বিশেষ করে তাদের টিকা আমাদের এখানে ট্রায়াল দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের কী সুবিধা আছে না আছে এসব জানতে চেয়েছি, যাতে পরে এসব নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি না হয়।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘চীনের যে প্রতিষ্ঠানটি এখানে ট্রায়াল করার জন্য আবেদন করেছে, তাদের কাছে আমাদের বড় প্রশ্ন হচ্ছে, এই টিকা সফল হলে আমরা তাদের কাছ থেকে কী পরিমাণ পাব এবং সেটার দামের বিষয়টি কী হবে। আমরা বিনা মূল্যে তাদের কাছ থেকে কোনো টিকা পাব কি না, সেটাও জানতে চেয়েছি। এ ছাড়া ট্রায়ালের সময় কারো ক্ষতি হলে কিভাবে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, সেই বিষয়গুলো আমাদের জানা দরকার। এসব না করে কেউ আবেদন করল আর আমরা অনুমোদন দিয়ে দিলাম, সেটি তো হয় না।’

আগের দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকাদান কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করাকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেছিলেন। অর্থাৎ তালিকা প্রণয়ন এবং সেই তালিকা অনুযায়ী যারা যারা টিকা পাবে, সবাইকে সঠিকভাবে টিকা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করাকেই তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

যে স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা দেবেন তাঁদের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

যদিও এই টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী হিসেবে বিবেচিত স্বাস্থ্য বিভাগের প্রায় ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীরা পড়েছেন বিপাকে। গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সহকারীরা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। সে কারণে কোথাও কোথাও তাঁদের বেতন আটকে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ফলে টিকা দেওয়া নিয়ে জটিলতার আশঙ্কা করছে কেউ কেউ।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply