অনলাইন ডেস্ক:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ ফুট বেড়েছে। এতে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৯ গ্রাম।
গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মে) থেকে উপজলা পরিষদ এলাকার বিষখালী তীরের বাঁধের একটি অংশ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে বাড়ির আঙিনায়। তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের। এতে আতঙ্কে রয়েছেন বাঁধভাঙা এলাকার বাসিন্দারা।
পানিতে তলিয়ে গেছে কাঁঠালিয়া সদর, বড় কাঁঠালিয়া, পূর্ব কচুয়া, লতাবুনিয়া, রঘুয়ার দড়ির চর, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আমুয়াসহ বিষখালী নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের গ্রাম। এছাড়াও জেলা সদর, নলছিটি ও রাজাপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। রাতে পানি বাড়ার আতঙ্কে ছিল নদীতীরের মানুষ। এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি এসব এলাকার বাসিন্দারা। তবে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখা দিলে জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে পারেন স্থানীয়রা।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও ২০০ টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ৪৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গঠন করা হয়েছে ৩৭টি মেডিক্যাল টিম।
বিষখালী নদীতীরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আমরা খুবই আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে রাতে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকতে হয়, কখন বাড়িঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়। হঠাৎ করে নদীর বাঁধ ভেঙে যেভাবে পানি উঠছে, তাতে খুবই বিপদে আছি।’
কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, বহু বছর ধরে লঞ্চঘাট এলাকা ভেঙে বিষখালী নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গতবছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে লঞ্চঘাটের ৩০০ মিটার এলাকায় বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের উত্তর দিকে কিছুই ফেলা হয়নি। পানির স্রোতের চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙছে। এখন বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। রাতে পানি আরো বাড়তে পারে। আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। তাই দ্রুত এ বাঁধটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।
কাঁঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. কিবরিয়া বলেন, এক জোয়ারেই পানি অনেক বাড়ছে। এহন বেড়ি ভাইঙ্গা ওই পাশ দিয়্যা ছুইট্ট্যা গ্যাছে। এতে আমাগো কৃষির অনেক ক্ষতি হইছে। গাছের মরিচ ও ডাইল তুইল্লা নেওয়া যাইবে না। আর রাইতে পানি বাড়লে আমাগো বাড়ি-ঘর তো পুরাই ডুইব্বা যাইবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে আমি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। তবে উপজেলা পরিষদের পেছনে বিষখালী নদীর তীরের বাঁধের কিছু অংশ ভেঙেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় উপজেলা পরিষদে জরুরি সভা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।