জুতার মধ্যে পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস। এ বিষয়ে সতর্ক করলেন সংক্রমণ রোগের গবেষকরা। তারা বলছেন, জুতার তলায় পাঁচদিনের মতো করোনাভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে।
ফলে কারও জুতায় যদি করোনাভাইরাস থেকে থাকে তবে সেই জুতা পরে সুপারমার্কেট, বিমানবন্দর বা গণপরিবহনে উঠলে করোনার প্রকোপ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
জুতার সোল মূলত ব্যাক্টেরিয়া, ফাংগি এবং ভাইরাসের প্রজনন ক্ষেত্র। তবে ভাইরাস জুতার উপরে, নিচে বা যে কোন স্থানেই বেঁচে থাকতে পারে।
জুতার সোল টেকসই, সিনথেটিক বস্তু যেমন রাবার, পিভিসি বা লেদার লাইনের সাথে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়। এসব উপাদান উচ্চ মাত্রায় ব্যাক্টেরিয়া বহন করতে পারে। এগুলোতে বাতাস, তরল প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ভাইরাস এবং ব্যাক্টেরিয়া সহজেই সেখানে দিনের পর দিন টিকে থাকতে পারে।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস। অপরদিকে স্টেইনলেস স্টিল এবং প্লাস্টিকে এই ভাইরাস তিনদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
ট্যাপ, ফোন, দরজার হ্যান্ডেল, কম্পিউটারের কী-বোর্ড এবং টয়লেটসহ যেসব জিনিস প্রতিদিন ব্যবহার করা হয় বা হাতে স্পর্শ করা হয় সেগুলো প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্লীচ বা ৭০ ভাগ অ্যালকোহল ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ওই গবেষণা বলছে, জুতার মধ্যে ব্যবহৃত সিনথেটিক বস্তুতে করোনাভাইরাস পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ড. মেরি ই. স্মিডও এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এ ধরনের সিনথেটিক আবরণে পাঁচদিন বা তার বেশি সময় করোনাভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে। এ কারণে জুতা ঘরের বাইরেই রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, বাজার থেকে শাক-সবজি এবং ফলমূল নিয়ে আসার পর যত দ্রুত সম্ভব সেগুলো ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সামান্য গরম পানি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
মেলবোর্নের পরিবেশ বিষয়ক বিজ্ঞানী নিকোল বিজলসমা সতর্ক করে বলেছেন, ঘরের দরজার বাইরে বা ভেতরে রাখার চেয়ে জুতা একেবারে বাড়ির বাইরে রেখে আসাই সবচেয়ে ভালো।
এ বিষয়ে সচেতন না হলে নিজের অজান্তেই করোনাভাইরাস সাথে নিয়ে ঘুরতে হবে। আর এতে করে ওই জুতা পড়ে যত জায়গায় যাওয়া হবে ভাইরাস তত জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে।