অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত এই কথাটা বিএনপি অস্বীকার করতে পারবে না। কারণ জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে কেন বিদেশে পাঠালো ?
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়।
একুশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতারা জড়িত বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে জাহাঙ্গীর কবির নানক আরো বলেন, খালেদা জিয়ার সুরেই বিএনপি নেতারা কথা বলছে। ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে মোস্তাক জড়িত এই কথা আমরা অস্বীকার করি না। তবে সেদিনের ঘটনায় জিয়াউর রহমান জড়িত এই কথাও বিএনপি অস্বীকার করতে পারবে না। করণ জিয়াউর রহমান জড়িত যদি নাই থাকত, তাহলে কেন সে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কে বিদেশে যেতে সাহায্য করেছে? কেন খুনিদেরকে দূতাবাসে চাকরি দিয়েছেন?
খুনিরা মারা যাওয়ার পরে খুনিদেরকে পারিবারিক আর্থিক সহযোগিতা কেন করেছেন? মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এসব প্রশ্নের উত্তরও চান আওয়ামী লীগের এই নেতা। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছেন জানিয়ে নানক বলেন, খালেদা জিয়াও বিনাভোটে খুনিদেরকে সংসদে এনেছেন। কেন এনেছেন?
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল বিশ্ব তখন দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক, অপর ভাগে শোষিতরা। সে শোষিত মানুষের নেতা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর সেই কারণেই বঙ্গবন্ধু সেসময় বলেছিল বিশ্ব যখন দুই ভাগে বিভক্ত আমি তখন শোষিতের পক্ষে। ’৭১ মুক্তিযুদ্ধ থেকে সেই লড়াই শুরু হয়েছে। যা দেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নৌবহর পাঠিয়ে আমার দেশের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা পারেনি। সেই থেকে আমার দেশে রাজনৈতিক সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
সেই পরাজয় পাকিস্তান এবং মার্কিনরা সহ্য করতে পারে নাই বলেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে উল্লেখ করে নানক আরো বলেন, সেদিন কেন আওয়ামী লীগের একটি নেতা ও ছিল না একটি প্রতিবাদের ডাক দেবে। তাদেরকে প্রতিরোধ করবে? কেন সেদিন একটি নেতাও পাওয়া গেল না? কারণ সেদিন ছিল নেতৃত্বের ভেতরে ভীরুতা এবং কাপুরুষতা।
সেদিন এই ছাত্রলীগই রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু ও তার সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদী এই ছাত্রলীগই রাজপথে শত বাধা পেরিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বঙ্গবন্ধুর জন্য চোখের পানি ঝরিয়েছে, দোয়া করেছে, একটি প্রতিবাদের ডাক চেয়েছে তবে সেটা তারা পায়নি।
বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি দিয়ে সাবেক এ ছাত্রনেতা বলেন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অপপ্রচার অবশ্যই বন্ধ করতে। এগুলি নিঃসন্দেহে সংগঠনের জন্য খারাপ দিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব কে অনুসরণ করে ছাত্রলীগকে আরো বেশি শৃংখলাবদ্ধ হয়ে চলার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যসহ মহানগর উত্তরের সাবেক ছাত্রলীগের নেতারা।