দুর্গাপুর প্রতিনিধি: আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন দুর্গাপুরে এনজিও’র ঋনের দায়ে শিশুসহ জেলে যাওয়া মা নিলুফা বেগম। সোমবার রাজশাহী জেলা বিজ্ঞ যুগ্ম তৃতীয় আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আসামীর আইনজীবি হিমেল হোসনাইন। এরআগে বে-সরকারী ‘বীজ’ নামক একটি এনজিও সংস্থা আদালতে চেক ডিজনার মামলা করে। আদালত থেকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকায় সোমবার শিশুসহ নিলুফাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজাতে পাঠায় থানার পুলিশ। নিলুফার উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুস সালামের স্ত্রী।জানা গেছে, সাংসারিক টানাপোড়নে প্রায় দুই বছর আগে উপজেলা সদর থেকে বে-সরকারী ‘বীজ’ নামক এক এনজিও সংস্থা থেকে নিলুফা জনতা ব্যাংক দুর্গাপুর শাখার চেক এনজিওতে জমা দিয়ে মাসিক কিস্তিতে ১লাখ টাকা লোন নেন। তারপর একটানা ৪ কিস্তি পরিশোধ করেন। এরপর হঠাৎ নিলুফার স্বামী সালাম অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে এলাকাবাসীর সাহায্য সহযোগিতায় রামেক হাসপাতাল থেকে দেড় মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে সালাম। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরা মাত্র ওই এনজিওর কর্মী ও ম্যানেজার তাদের বাড়িতে গিয়ে লোন পরিশোধ করতে বলেন। তা না হলে তারা মামলার হুমকিও দেন।পরে এনজিও’র চাপের মূখে মামলার ভয়ে এলাকার দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চড়া সুদে আবারও টাকা নিয়ে এনজিওর ম্যানেজারকে আরও একটি কিস্তি দেন নিলুফা দম্পতি। পরের মাসে দাদন ব্যবসায়ীর চাপে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে এনজিও’র কিস্তি দিতে অপারগতা প্রকাশ করে তারা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ‘বীজ’ এনজিওর দুর্গাপুর শাখার ব্যবস্থাপক মহিরুল ইসলাম আব্দুস সালামের স্ত্রী নিলুফার বেগমের জমা রাখা জনতা ব্যাংকের চেক ডিজনার করে নিলুফাকে আসামী করে আদালতে মামলা করে। এরপর দেশে মহামারি কোভিট-১৯ করোনা ভাইরাসের প্রভাব আসলে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আব্দুস সালাম দিশেহারা হয়ে পড়ে। টাকার অভাবে শহরে গিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে না পারায় বিজ্ঞ আদালত হত দিনমজুর আব্দুস সালামের স্ত্রী নিলুফার নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে। ২৪ জানুয়ারি রোববার রাত ১২টার দিকে দুর্গাপুর থানা পুলিশ উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের নিজবাড়ী থেকে সালামের স্ত্রী নিলুফাকে এক বছরের বাচ্চাসহ গ্রেপ্তার করে। দুধের বাচ্চা সামিয়াকে নিয়ে মা নিলুফা বেগম থানায় রাতভর আটক থাকার পর সোমবার শিশুকন্যা সামিয়া সহ মা নিলুফা বেগমকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করে থানার পুলিশ। জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী বলেন, আদালত থেকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থানায় আসায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তবে আসামীর এক বছরের দুধের শিশু থাকায় পুলিশ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দুধের গ্রেপ্তারের পর শিশুকন্যাকে সহ আসামী নিলুফা বেগমকে থানা হাজতে না রেখে অফিসারদের ডিউটির কক্ষে যত্ন সহকারে রাতটুকু রেখে সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে।বে-সরকারী এনজিও সংস্থা ‘বীজ’ এনজিওর দুর্গাপুর শাখার ব্যবস্থাপক মহিরুল ইসলামের সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইল ০১৭১৩-৩৪৪৯২৯ নম্বরের ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।#