Sunday , 24 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
চুয়াডাঙ্গা যেন আবর্জনার শহর!
--সংগৃহীত ছবি

চুয়াডাঙ্গা যেন আবর্জনার শহর!

অনলাইন ডেস্ক:

আবর্জনার শহরে পরিণত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা। যেখানে সেখানে ডাস্টবিন থেকে উপচে পড়ে আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। ডাস্টবিনের আশেপাশেও থাকে আবর্জনার স্তুপ। শহরবাসীর অভিযোগ, পৌরসভার গাড়ি নিয়মিত আসে না। এজন্য রাস্তার পাশেপাশে ছাড়ানো ছিটানো থাকে আবর্জনা। শহরবাসীকে উৎকট দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এগুলো শহরের ভেতরের চিত্র। শহর ছেড়ে বাইরে বেরুতে হলেও একই দুর্ভোগ পেরোতে হয়। নাকে রুমাল চেপে অথবা কিছু সময়ের জন্য নিঃশ্বাস বন্ধ করে যাতায়াত করতে হয়।

শহরের দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা আবর্জনা ফেলার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কিছু স্থান চিহ্নিত করেছে। মাথাভাঙ্গা নদীর তীরের কয়েকটি জায়গা, চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ প্রধান সড়কে শহরের বাস টার্মিনালের কাছে, চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের ঘোড়ামারা ব্রিজের নিকট এবং শহরের ভেতরের আরো কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গা আবর্জনার জন্য ঠিক করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহর অতিক্রম করে ঝিনাইদহের দিকে যেতে বাস টার্মিনাল পার হওয়ার পরপরই নাকে আসে উৎকট দুর্গন্ধ। টার্মিনাল পার হওয়ার পরপরই রাস্তার দু’পাশে দেখা মেলে আবর্জনার স্তুপের। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন পৌরসভার গাড়ি এসে এই স্থানে আবর্জনা ফেলে চলে যায়। চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ প্রধান এই সড়কটি ব্যস্ততম সড়ক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়কে সব ধরনের ভারি যানবাহন চলাচল করে। ঢাকা, বরিশাল, কুষ্টিয়া ও খুলনা রুটের গাড়িগুলোও এই পথে যাতায়াত করে। বাস-ট্রাকের পাশাপাশি ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও পায়ে হেঁটেও মানুষকে এই সড়কে চলতে দেখা যায়। রাস্তার গা ঘেঁষে আবর্জনা পড়ে থাকায় চলাচলকারীদের প্রকট দুর্গন্ধ সহ্য করেই এই স্থান অতিক্রম করতে হয়।

একই অবস্থা চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কেও। শহরের পৌর এলাকার ঘোড়ামারা ব্রিজের কাছে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় আবর্জনা। এই সড়কেও যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। আবর্জনার স্তুপ বড় হলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই আগুনের তাপে ঝলসে যাচ্ছে আশপাশের গাছপালা। অনেক গাছ ইতিমধ্যেই আগুনের উত্তাপে পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার আবর্জনার কারণে এই দুর্ভোগগুলো ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের রেললাইনের পাশে ফেলা হচ্ছে দর্শনা পৌরসভার আবর্জনা। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের রেলস্টেশন এলাকার পাশের রাস্তায় পড়ছে আলমডাঙ্গা শহরের আবর্জনা। জীবননগর শহরের জীবননগর-দত্তনগর সড়কের পশু হাটের সামনে এবং ভৈরব নদের পাশে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থায় পুরো চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীকে শহরের আবর্জনা নিয়ে পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়। বিশেষ করে সব এলাকাতেই রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলার কারণে জনদুর্ভোগ বেশি বেড়েছে।

kalerkantho

চুয়াডাঙ্গা শহরের একজন এনজিওকর্মী বলেন, শহরের চাঁদমারি মাঠ এলাকার রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। দুর্গন্ধে এই রাস্তায় চলা মুশকিল। দেখার কী কেউ নেই?

শহরের কোর্টপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, শহরের আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান যেহেতু নেই, পৌর কর্তৃপক্ষ রাস্তার পাশে না ফেলে দূরে অনাবাদি কোনো জমিতে ময়লা ফেললে হয়তো এতো বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।

রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক বলেন, পৌর এলাকার কিছু অসচেতন বাসিন্দা দূর থেকে ডাস্টবিন লক্ষ্য করে আবর্জনার প্যাকেট ছুঁড়ে ফেলেন। আবর্জনা ডাস্টবিনে না পড়ে বাইরে ছিটকে পড়ে। এ দায়ভার পৌর কর্তৃপক্ষের নয়। পৌরবাসীকে সচেতন হতে হবে। চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর ও চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের পাশে যে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে তার সমাধান হয়ে যাবে কয়েক মাসের মধ্যে। ইতিমধ্যেই ড্যাম্পিং স্টেশর তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। ডাম্পিং স্টেশন চালু হলে সেখানে আবর্জনা নিয়ে ফেলে আসা হবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply