Monday , 16 September 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
চলছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর শেষ পর্যায়ের কাজ
--সংগৃহীত ছবি

চলছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর শেষ পর্যায়ের কাজ

অনলাইন ডেস্কঃ

যমুনা নদীর উজানে নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু। সেতুটির নির্মাণকাজ আগেই শেষ হয়েছে। শেষ হয়েছে মূল সেতুতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজও। আর দুুই পারে সব মিলিয়ে সেতুকেন্দ্রিক ৩০ কিলোমিটার রেললাইনও বসানো শেষ।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বর্তমানে চলছে রেললাইনের এলাইনমেন্টের কাজ। পাশাপাশি সংকেত স্থাপনের কাজকে কিভাবে আরো গতিশীল করা যায়, সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। সেতুর পূর্ব অংশের সব কাজ শেষ হলেও পশ্চিম অংশের স্টেশন ভবন ও প্ল্যাটফরম নির্মাণকাজ এখনো বাকি ৩০ শতাংশের মতো।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘স্টেশন ভবন ও প্ল্যাটফরমের কিছু কাজ বাকি থাকলেও তাতে ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হবে না।

বিভক্ত পূর্ব-পশ্চিমপারের অপেক্ষা ঘুচবে 

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু চালু হলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের বর্তমান অবস্থা পাল্টে যাবে। মূলত যমুনা নদী রেলওয়ের দুই অঞ্চলকে বিভক্ত করে রেখেছে।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর পূর্বাংশে ঢাকা, চট্টগ্রাম পর্যন্ত এলাকা পূর্বাঞ্চল। আর সেতুর পশ্চিমাংশে রাজশাহী, খুলনা পশ্চিমাঞ্চল। এই দুই অঞ্চলের রেললাইনের ধরন আলাদা। পূর্বাঞ্চলের রেললাইনের প্রায় পুরোটায় মিটার গেজ ট্রেন চলাচল করে। এই ট্রেনগুলো প্রস্থে ছোট হওয়ায় রেললাইনগুলোও সরু। আর পশ্চিমাঞ্চলের রেললাইনে বেশির ভাগ চলাচল করে ব্রড গেজ ট্রেন। ফলে রেললাইনও চওড়া।

বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুতে বর্তমানে রয়েছে এক লাইনের রেলপথ। এই লাইন দিয়ে ধীরগতিতে ট্রেন চলাচল করে। পূর্ব স্টেশন থেকে একটি ট্রেন ছাড়লে পশ্চিম স্টেশনের ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হয়। নির্মীয়মাণ বঙ্গবন্ধু রেল সেতু ডুয়াল গেজ রেল সেতু। ফলে সেতুটি দিয়ে ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে।

গতির সঙ্গে বাড়বে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন

রেলের তথ্য মতে, বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করে। নতুন সেতু চালু হলে দিনে চলবে ৮৮টি ট্রেন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যেখানে ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে, সেখানে নতুন রেল সেতুতে ব্রড গেজ ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে। এতে ট্রেন চলাচলের সময় প্রায় ৩৫ মিনিট কমে আসবে।

ট্রান্স এশিয়ায় যুক্ত হবে এই রেলপথ

একই সঙ্গে নতুন সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশে পরিণত হতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নানা জটিলতা কাটিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হবে।

৯২ শতাংশ কাজ শেষ

২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলেও মূল কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১০ আগস্ট। দুই ভাগে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১ আগস্ট পর্যন্ত নির্মাণকাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯২ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৮.২৪ শতাংশ।

আসছে নতুন রেললাইন

যমুনা নদীর ওপর রেলপথ পুরনো হলেও নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে ৩০ কিলোমিটার রেললাইন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে নির্মিত হচ্ছে ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের মূল সেতুটি। এর সঙ্গে সেতুর দুই প্রান্তে থাকছে .০৫ কিলোমিটার সংযোগ সেতু, ৭.৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে সংযোগ বাঁধ এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘এই একটি সেতু পশ্চিমাঞ্চল রেলের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে। বিদ্যমান সেতুতে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পশিমাঞ্চলে যাত্রীর চাহিদা থাকার পরও ট্রেন বাড়ানো যাচ্ছিল না। এখন সেটা সম্ভব হবে। গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য পরিবহনের সক্ষমতাও বাড়বে।’

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply