উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত তুমব্রু কোনারপাড়া রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রিত আরাকান বিদ্রোহী গ্রুপের ক্যাডারদের ১৭/১৮টি অবৈধ গরু জব্দকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। তুমব্রু বিজিবি গরুর চালান জব্দের ঘটনায় স্থানীয় দুই বাসিন্দাকে দুস্কৃতকারী রোহিঙ্গারা ধরে নিয়ে যায়।তারমধ্য মনির আহমদ নামের একজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও,ছৈয়দ নুর লাদেন নামের একজনকে চোখ বেধে ধরে নিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে।১২ জুন সকাল সাড়ে ১০ টায় ধরে নিয়ে লাদেন কে দীর্ঘ ৫ ঘন্টা পর্যন্ত আটকিয়ে রেখে ব্যাপক মারধর করে শরীরের বিভিন্ন অংশে নীলা ফোলা জখম করেছে।পরে বিজিবি’র সহযোগিতায় বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার প্রতিবাদের মুখে লাদেন কে ছাড়িয়ে আনা হয়।এ ঘটনায় জড়িত ৩ দুস্কৃতকারী রোহিঙ্গাকে আটক করে রেখেছে জনতা।স্থানীয়দের দাবী অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় আল ইয়াকিন গ্রুপের ক্যাডাররা জড়িত।
আটক দুস্কৃতকারী রোহিঙ্গারা হলেন তুমব্রু জিরো পয়েন্টে আশ্রিত রোহিঙ্গা গোরা মিয়ার ছেলে জোবাইর আলম(২০),মোহাম্মদ সিদ্দিকের ছেলে নুরুল আলম(২২) ও ছৈয়দ হোছনের ছেলে মোঃখালেদ(৩০)। তাদের কে স্থানীয় যুবক অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনার দায়ে পুলিশে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
জানাগেছে,করিডোর বাদ দিয়ে রাজস্ব বিহীন মিয়ানমার থেকে গরুর চালান আসছে খবর পেয়ে তুমব্রু ফাঁড়ির বিজিবি’র জওয়ানরা গরুগুলো জব্দ করে।গরু চোরাকারবারি ও বিস্তারিত খবর জানতে বিজিবির পক্ষে স্থানীয় দুই বাসিন্দা ওই রোহিঙ্গা বস্তিতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দলনেতা মৌলবী আরেফ আহমদ ও দিল মোহাম্মদের বাহিনীর ক্যাডাররা তুমব্রু এলাকার নজির আহমদের ছেলে ছৈয়দ নুর ওরফে লাদেন ও মনির আহমদ নামে দুইজন বাংলাদেশী নাগরিককে আটকে রাখার ঘটনায় তাদের পরিবারে কান্নার রোল বয়ে যায়। শনিবার ভোরে গরু আটকের পর সাড়ে ১০ টায় অপহরণের ঘটনা ঘটে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে।
জানাগেছে, মিয়ানমার অভ্যন্তরে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কতিপয় সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা অবৈধভাবে গরুর একাধিক চালান প্রবেশ করিয়েছে বাংলাদেশে। সীমান্তরক্ষী বিজিবি খবর পেয়ে সোর্স নিয়োজিত রাখে এবং শনিবার ভোরে ১৭/১৮টি মিয়ানমারের গরু জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।গরু জব্দের খবর পেয়ে মিয়ানমারের জিরো পয়েন্টে থাকা সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা ওই ক্যাম্পে বিজিবির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।বিজিবি জওয়ানরা ওই রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে জব্দকৃত গরুর বৈধ কাগজপত্র চাইলে রোহিঙ্গারা বৈধ কাগজ বা রাজস্ব প্রদানের কোন ধরণের ডকুমেন্ট জমা করতে পারেনি। শনিবার দুপুরে তুমব্রুতে অনুষ্টিত ওই বৈঠক শেষে আরাকান বিদ্রোহী গ্রুপের দলপতি আরেফ আহমদ ও দিল মোহাম্মদ গরু ছাড়লে আটক বাংলাদেশী দুই নাগরিককে ছেড়ে দেয়া হবে মর্মে হুসিয়ারী দিলেও বিজিবি’র সহযোগিতায় স্থানীয়রা অপহ্নতদের ছাড়িয়ে আনতে সক্ষম হয়।
ঘুমধুম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছৈয়দুল বশর বলেন,গরু পাচার ও আটক কে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই যুবক কে অপহরণ ও নির্যাতন চালায় রোহিঙ্গারা।বিজিবি’র সহযোগিতায় তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেছেন,রোহিঙ্গার হাতে অপহ্নত ও নির্যাতনের শিকার ছৈয়দ নুর লাদেন আইনের আশ্রয় নেবে।এ নিয়ে স্থানীয়দের উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করে শান্ত থাকার আহবান জানান।
বিজিবি ঘুমধুম বিওপির সুবেদার মুজিবুর রহমান বলেন,উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তুমব্রু বিওপির জওয়ানদের নিয়ে জিরো পয়েন্ট থেকে অপহ্নতদের ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।বর্তমানে ওখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃদেলোয়ার হোসেন জানান,আটককৃত রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের হেফাজতে আছে,পুলিশে দিতে পারে।