তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ট্রাম্প সম্প্রতি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজার দুই মিলিয়নের বেশি ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করে অঞ্চলটির পুনর্গঠনের প্রস্তাব দেন। এ পরিকল্পনা বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজা যুদ্ধ শেষের পর এই উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করবে ইসরায়েল। উপত্যকার বাসিন্দাদের অন্য কোথাও পুনর্বাসিত করা হবে।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, তিনি গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নিয়ে মিসর এবং জর্দানে পুনর্বাসিত করতে চান। গাজা পরিষ্কার করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথাও বলেন তিনি।
এদিকে রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার ক্ষমতা কারো নেই।
এএফপি জানায়, গতকাল রবিবার মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, ‘গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনিদের। হাজার বছরের পুরনো এই চিরায়ত মাতৃভূমি থেকে গাজার জনগণকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই।’
এরদোয়ান ট্রাম্পের প্রস্তাবকে মূল্যহীন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘জায়নবাদী নেতৃত্বের চাপে মার্কিন প্রশাসনের দেওয়া গাজা প্রস্তাবের কোনো গুরুত্ব নেই।’ এর আগে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ফিলিস্তিনি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গাজাবাসীকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ট্রাম্প গাজাকে ধ্বংসস্তূপ ও অবিস্ফোরিত বোমামুক্ত করে অর্থনৈতিকভাবে পুনর্গঠনের কথা বললেও সেখানে বসবাসরত জনগণকে কিভাবে সরানো হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার দায়িত্ব নেবে এবং আমরা সেখানে আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।’
ট্রাম্প বলেছেন, গাজা উপত্যকা কিনে নিয়ে এর মালিকানা নিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গাজাকে একটি ‘বড় রিয়েল এস্টেট সাইট হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোকেও এর পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। আমাদের পৃষ্ঠপোষকতায় অন্যরাও এটি করতে পারে।’ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনার ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস, ইসলামিক জিহাদসহ বিশ্বের প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে গাজার বাসিন্দাদের সেখান থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা জাতিগত নিধনের শামিল হবে বলেও মন্তব্য করে তারা।