গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা পূর্ব কলমেশ্বর এলাকায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট মেয়ে শাহনাজের ভাড়া বাসায় বেড়াতে এসে খুন হলেন মা বানু বেগম। ঘটানার ৫ দিনের মাথায় মূল হোতা এমরান মিয়া হ্নদয়কে (২২) গ্রেফতার করেছে গাছা থানা পুলিশ।
গতকাল ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে গাছা থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জিএমপি অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
হাফিজুল ইসলাম বলেন, বানু বেগম নরসিংদী জেলা থেকে নগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব কলমেশ্বর সিদ্দিকূর রহমান পাটোয়ারী বাড়ীর ৩য় তলায় ছোট মেয়ে শাহনাজের ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসেন মা বানু বেগম ও মায়ের প্রথম সংসারের বড় বোন রহিমা আক্তার আসমা। রহিমা আক্তার আসমার সাথে মা বানু বেগমের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত (২৬ আগস্ট) জুসের সাথে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে শয়ন কক্ষে খাটে শায়িত অবস্থায় রেখে, নতুন ভাড়া বাসা খোঁজা ও বাজার করার অজুহাতে ছোট বোন শাহানাজসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
এসময় আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী রহিমার পালক ছেলে এমরানকে নরসিংদী জেলা থেকে আসতে বলে। সে এসে এলাকায় অবস্থান নেয়। বাসা থেকে বের হয়ে এমরানকে মোবাইল ফোনে তার মাকে গলা কেটে হত্যার নির্দেশ দিলে সে ঘরে ঢুকে ধারালো ব্লেড দিয়ে অচেতন বানুর গলা কেটে তাকে হত্যা করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরিকল্পনা মোতাবেক রহিমা বাসায় এসে ফ্লোরের রক্ত পরিষ্কার করে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশ আসতে বলে। পুলিশ এসে দেখেন ভিকটিম অচেতন অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছেন। তাকে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গাছা থানা পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ হাসপাতাল পৌঁছানোর আগেই ভিক্টিমের মেয়ে রহিমা আক্তার আসমা ভর্তির সনদপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। ভিক্টিমের ছেলে শাহাদাত হোসেন বাদি হয়ে গাছা থানায় মামলা করলে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এমরানকে নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার কারারচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সে বানু বেগমকে খুন করার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এ খুনের পরিকল্পনাকারী রহিমা পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। প্রেসব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাকসুদুর রহমান, ওসি মো. ইব্রাহিম হোসেন পিপিএম ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী, এস আই এহসানুল হক, এসআই মোঃ সাখায়াত হোসেন।