গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়া হয়েছে। মামলার অপর চার আসামির মধ্যে আবুল হোসেন নামে একজনের মুত্যু হয়েছে এবং ৩ জন নারী আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলো- হাফিজার রহমান, হযরত আলী ও আজিজল হোসেন। তারা সহদর ভাই। মৃত্যুদন্ডদের মধ্যে হাফিজার রহমান পলাতক রয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দু’জন উপস্থিত ছিল।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ঝিনিয়া গ্রামের হযরত আলীর সাথে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে হযরত আলী আমন ধান চাষ করে। আদালতে মামলার রায় পেয়ে ২০১৬ সালের ১২ নভেম্বর আব্দুল জলিল তার লোকজন নিয়ে ধান কাটতে যায়। ধান কাটার বিষয়টি আগেভাগে জানতে পেরে হযরত আলী গোপনে জমির পার্শ্ববর্তী তার রাইচ মিল থেকে বিদ্যুতের ছেঁড়া তার পেতে সম্পুর্ণ জমি ঘিরে রাখে। ওইদিন সকালে আব্দুল জলিলের আত্মীয় তসলিম উদ্দিন নারী-পুরুষ শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে ধান কাটতে নামলে প্রথমে তসলিম উদ্দিন বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার চাচাতো বোন মর্জিনা খাতুনও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। এতে আরও ৪ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় নিহত তসলিম উদ্দিনের বাবা মফিজল হক বাদি হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় ওইদিন রাতে ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। সেসময় পুলিশ আবুল হোসেনের ছেলে হযরত আলী, হাফিজার রহমান, আজিজল হক, মৃত বজর আলীর ছেলে আবুল হোসেন, হযরত আলীর স্ত্রী গোলেনুর, আবুল হোসেনের স্ত্রী জরিনা বেগম, মোজাহার আলীর স্ত্রী আকলিমা বেগম ও হাবিজার রহমানের স্ত্রী মোর্শেদা আক্তারকে গ্রেফতার করে।
গাইবান্ধা জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, এই নৃশংস হত্যাকান্ডে অপরাধীদের অপরাধ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক ৩ আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের এই রায় ঘোষণা করেন।