পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর গলাচিপায় পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছে এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের কিসমত বাউরিয়া গ্রামে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ফেদুলি মৃধা বাড়িতে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) আহত গৃহবধূ রুজিনা বেগম (৩০) হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হামলার বিষয়ে প্রতিবেদককে জানান। আহত গৃহবধূ রুজিনা বেগম হচ্ছেন কিসমত বাউরিয়া গ্রামের মোঃ ইউনুচ মৃধার ছেলে জুয়েল মৃধার স্ত্রী। এ বিষয়ে রুজিনা বেগমের শশুর বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে মোকাম বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, গলাচিপায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১৭৭/২০২৩, তারিখ- ২৭/০২/২০২৩ খ্রিঃ। মামলা সূত্রে জানা যায় পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা হওয়ার পর মামলার বাদীর অংশের জায়গায় সীমানা চৌহদ্দির মধ্যে একটি আধাপাকা গোয়াল ঘর তৈরি করে গবাদি পশু পালন করে আসছেন ইউনুচ মৃধার ছেলে জুয়েল মৃধা। কিন্তু প্রতিপক্ষ বাদীর ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা লাভজনক দেখে উক্ত গোয়ালঘর দখল করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে। এরই জেরে পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী ১। মো. শামীম মৃধা (৪০), ২। মো. সোহাগ মৃধা, ৩। মোখলেছ মৃধা, ৪। বাবুল সরদার, ৫। মো. টিপু, ৬। নুর জামাল সরদার একত্রিত হয়ে আরো কয়েকজন ৪/৫ জন লোক নিয়ে গোয়াল ঘর ভাংচুর করে অন্যত্র ফেলে দেয়। এ সময় বাদীর পুত্রবধূ জুয়েলের স্ত্রী রুজিনা বেগম বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা তাকে পিছন থেকে কোপ দেয়। তাকে আসামীরা এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। বাদীর স্ত্রী মোর্শেদা বেগম তাকে বাঁচাতে গেলে আসামীরা মোর্শেদা বেগমকেও এলোপাথারীভাবে মারপিট করে। এ বিষয়ে আহত রুজিনা বেগম বলেন, আমার গোয়াল ঘর প্রতিপক্ষরা লোকজন নিয়ে দিনে দুপুরে ভেংগে ফেলে। আমি জিজ্ঞাসা করতে গেলে তারা আমাকে মারধর করে এবং কোপ দেয়। তারা আমাদেরকে জীবন নাশের হুমকি দেয়। আমার ঘরের দরজা, জানালা, বেড়াসহ আসবাবপত্র কুপিয়ে তছনছ করে দেয়। এ সময় আমার শ্বাশুরী ও মেয়ের ডাক চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে পড়লে আসামীরা চলে যায় এবং মামলা করলে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. ইউনুচ মৃধা (৭৫) বলেন, আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তিতে গোয়াল ঘর তৈরি করলেও লোভের বশে আমারই ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা তা ভেংগে ফেলে এবং আমার পুত্রবধূকে খুনের জন্য কোপ দেয়। আমার ঘর ভাংচুর করে লুটপাট করেছে। এতে আমার ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আমাদেরকে আমার বাড়ি ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলতেছে নতুবা আমাদেরকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা ভয়ে আছি। তাই আমি গলাচিপা কোর্টে মামলা করেছি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ মো. শামীম মৃধার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওখানে আমাদেরও জায়গা আছে। আমাদের জায়গায় কেউ কোন ঘর করতে পারবে না। তবে এ বিষয়ে সালিশী হয়েছে। গলাচিপা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. নাইম বলেন, রুজিনা বেগম আমার চিকিৎসাধীনে হাসপাতালের ৩য় তলার ১১ নম্বর বেডে ভর্তি আছে। তার মাথায় জখম, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো কালো দাগ আছে। এ বিষয়ে আমখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান মনির বলেন, নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। শুনেছি এ বিষয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। বিষয়টি এখন আইন দেখবে।