সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ গ্রাম থেকে গ্রাম অঞ্চলের শহরে বা রাস্তার ফুটপাতে যেখানে দেখা যায় ছোট-বড় চা দোকান রয়েছে। আমাদের দেশের একটি রেওয়াজ আছে গ্রাম বা শহরে চার দোকানে আড্ডা দিতে হবে। গ্রামের ছোট ছোট চা দোকানে পুকুর থেকে পানি এনে চা বানায় এমন কথাও শোনা যায়। আবার তারাই বলে পানি ফুটালে কিছুই থাকেনা। মধ্যবয়সী মুরুব্বীরা চা ফু দিবে আর গ্রামের রঙ্গ রসের আলাপ আলোচনা করবে। এ আমাদের আদিম পরমপারা। এখন আবার দোকানে দেখা যাচ্ছে মেশিনে ডিজিটাল চা বানানো। তার সাথে আবার কফি ও পাওয়া যায়। কনভিন্স দুধ, চাপাতা আর পানির মিশ্রণে চলছে চা বিক্রি আর মানুষের দেদারছে তা খাচ্ছে। বাংলাদেশের কোন জাতীয় পানীয় আছে কি! না আমার জানা নেই, আপনাদের জানা থাকলে জানাতে পারেন! দেশের কত কিছুই জাতীয় নেই, সেখানে আবার পানীয় কি!সরাইল উপজেলার মানুষ চা কেমন পছন্দ করে তা জানতে হলে আপনাকে রাস্তায় নামলেই চলবে! আপনি রাস্তার ধারে আজকাল যত চা দোকান দেখবেন তা দেখেই হয়ত অনুমান করতে পারবেন! শহরে গ্রামে এখন রাস্তায় ফুটপাতে হাজার হাজার চা দোকান। সাধারন গ্রামের বাজারেও চা দোকানের অভাব নেই। তবে দেখা যায় এই সব চা দোকানে কোন ভাবে গরম পানিতে চা পাতা দিয়ে সামান্য দুধ দিয়েই চা বানিয়ে দেয়া হয় চা পিপাসুকে। উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, চায়ের দুধ হিসাবে যে কনডেন্স দুধ ব্যবহার করা হয় তা শরীরের জন্য কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত। সেই বিষয়ে আমাদের কোন গবেষনা কি আছে, নেই বলেই চলে! পানি কোথায় থেকে আনা হচ্ছে পুকুরের না টিউবয়েলে সঠিক ভাবে বলা কিন্তু মুশকিল। আবার আছে বিভিন্ন দরনের চা পাতা যাই হোক, তবুও চলছেই! এসব চা কি আমাদের মানব দেহের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কিনা আজও আমরা জানি না। জিজ্ঞাসা করিনি চা কি পানি দিয়ে বানিয়েছেন। চার দোকান দেখলে আমরা বলি এক কাপ চা দাও। এখন আবার নতুনভাবে বলা হচ্ছে লাল চা না দুধ চা। দুধ চা সাধারণত কন্ডিস দুধ দিয়ে বানিয়ে থাকে। এ কন্ডিস দুধ দেহের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কিনা জানার প্রয়োজন মনে করি না।সরাইল উপজেলার সদরে একটি চা দোকানে কাপ হাতে নিয়ে চা চুমু খাচ্ছেন মো. রমজান আলি তিনি বলেন, ভাই আমরা কি এতকিছু বুঝি, আমরা চা কথা বলি চা দে খাইয়া পাচ টাকা দিয়ে চলে যায়। দুধ চা বললে ডিব্বার দুধ দিয়া একটু নাড়া দিয়ে চিনি বেশি হলে, একটু নাড়াচাড়া দিয়া দে চা খাইয়া চলে যাই। কোন দিন ভুলেও জিজ্ঞেস করি না, চায়ে কিসের দুধ কিসের পানি-! তিনি আরোও বলেন,চা’য়ের পিপাসা হয়, চা খাই’ কোনটা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ ভালো তাতো কোন সময় চিন্তাই করিনাই।সরাইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন মোড়ে চা দোকানে বসে চা খাচ্ছে এমন কয়েক জনের সঙ্গে আলাপ করলে তারা বলে, আমরা প্রতিনিয়তই কোন না কোন দোকানে চা পানকরছি। তবে কোন দিনেও কোন ভাবে জিজ্ঞেস করিনি চা কি পানি দিয়ে বানি য়েছেন,প্রতিদিন আমরা ১০-১২ কাপ চা খায়, কিন্তু মনি করি না এটা কি স্বাস্থ্যসম্মত।এটা যেমন জানেনা, অনেকেই জানেনা যে চা কেন খায়?? তবেও খাওয়া চলছে।মোঃ আরাফাত ঠাকুর বলেন, বাহিরের সব কিছুতেই সমস্যা, আমরা সচেতন মানুষরা বুঝে আবার বুঝিনা।এ সব জানার জন্য কথা বলি সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা ডা. মো. নোমান মিয়ার সঙ্গে তিনি বলেন, পানীয় ব্যাপারে অবশ্যই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে হবে। ডুবা বা পুকুরের পানি গরম করে পানীয় হিসেবে পান করা স্বাস্থ্যসম্মত না। মানসম্মাত দুধ চায়ের সাথে না হলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বাহিরের অপরিচ্ছন্ন পানীয় খাওয়া কারণে পাতলা পায়খানা,পেট ব্যাথা, ক্রিমিরোগ, আমাষা বা দীর্ঘ সময় অপরিচ্ছন্ন পানীয় কারণে অনেক সময় তা ক্যান্সারে পরিণত হয়। ফুটপাতে বা বাহিরে অপরিচ্ছন্ন পানীয় ব্যবহার বন্ধ করা দরকার। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। এসময় তিনি আরোও বলেন, কোন দূষিত পানি গরম করলেও তার মধ্যে দূষিত ব্যাকটোরিয়া থেকে যায়। দূষিত কুয়া বা পুকুরের পানি গরম হলেও পানীয় স্বাস্থ্যসম্মত না। তবে এসবের ব্যাপারে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে সচেতন করতে এবং সকলে সচেতন হওয়া একান্ত প্রয়োজন।