জবি প্রতিনিধি :
পুরান ঢাকার ধূপখোলায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) খেলার মাঠ। সেখানেই মার্কেট নির্মাণের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
জানা যায়, গত জুনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ১৭ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের আশঙ্কায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সিটি মেয়রের সঙ্গে দেখা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করার আশ্বাস দেওয়া হয়। সে সময় খেলার মাঠ থেকে খুঁটি সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু গত রোববার গভীর রাতে আবার পুরো মাঠ ঘিরে রাখা হয়। মাঠের গোলপোস্ট ও সীমানাপ্রাচীরগুলো তুলে ফেলে সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, প্রথমে সিটি করপোরেশন থেকে মাঠে মার্কেট নির্মাণ না করার আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন সে কথা রাখছেন না মেয়র। এখন মাঠ রক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠানো হবে। এতেও সমাধান না হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, ১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করে এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়) ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেন। তখন থেকেই মাঠটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনও এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে নিজেদের একমাত্র খেলার মাঠটি রক্ষার দাবিতে সরব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রবিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এরপর বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় রাখার জন্য হলেও মাঠ পুনরুদ্ধার করতে হবে, মাঠ না থাকলে শিক্ষার্থীরা মাদকের দিকে ঝুঁকবে। যতদিন পর্যন্ত আমরা কেরানীগঞ্জের ক্যাম্পাসে না যাব ততদিন পর্যন্ত আমরা ধুপখোলার মাঠ ব্যবহার করতে চাই। এ সময় শিক্ষার্থীরা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, লুটপাট করার জন্য আপনাদের অনেক জায়গা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দখল করে বাণিজ্য করার অশুভ চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। শিক্ষার্থীরা তাদের মাঠের কর্তৃত্ব রক্ষায় সমুচিত জবাব দিবে।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি পরবর্তীতে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক, লক্ষ্মীবাজার ও কাঠেরপুল হয়ে ধুপখোলা মাঠে প্রবেশ করে। সেখানে সিটি কর্পোরেশনের চলমান কাজ বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে।
এ সময় গেন্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাজু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমরা টহলরত অবস্থায় ছিলাম, খবর পেয়ে এখানে আসি। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছে।