অনলাইন ডেস্ক:
করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় আজ মঙ্গলবার মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলল। তবে প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে আগামী ২ মার্চ থেকে। প্রথমে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে। ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুল খুলছে আরো প্রায় দুই সপ্তাহ পরে।
এর আগে রবিবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম উল্লিখিত তথ্য জানিয়ে বলেছিলেন, বিধি-নিষেধ আর বাড়ছে না। খুলে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছিলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে সব শিক্ষার্থী এই সুযোগ পাবে না। যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছে তারাই শুধু সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। বাকিদের অনলাইনে বা অন্যান্য মাধ্যমে ক্লাস করতে হবে।
গত বুধবার রাতে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-কলেজ খোলার আগে ২০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
নির্দেশনাগুলো হলো―
১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেসব শিক্ষার্থী কভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছে সেসব শিক্ষার্থী সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়সমূহ ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করা।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন ভার্চুয়ায়াল প্ল্যাটফর্মে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
৫. শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণকৃত অ্যাসাইনমেন্টসমূহের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।
৬. শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন ইতোপূর্বে পাঠানো নির্দেশনা মোতাবেক প্রণয়ন করতে হবে।
৭. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশ/প্রস্থান মুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশ/প্রস্থান মুখ থাকে সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থান মুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা।
৮. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।
৯. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে সেই বিষয়ে তাদের শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং প্রদান করার ব্যবস্থা করা।
১০. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা।
১১. প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা।
১২. প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।
১৩. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।
১৪. প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্য কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
১৫. প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।
১৬. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা।
১৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও যাতে পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।
১৮. প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা।
১৯. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করা।
২০. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে সভা করে এসংক্রান্ত বিষয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন