মাসুদখাগড়াছড়ি: ঠিক অন্যান্য বছরের মতো এই বছরটা নয়। তাই ঠিক অন্যান্য বারের দুর্গাপুজোর মতোও ২০২০ সালের প্রাক দুর্গা পুজোওর রেশ একই মেজাজে নেই! তবুও উমা ফিরবেন ঘরে, তাই বাঙালি এই বিশ্বজোড়া সংকটের মধ্যেও ঘরের মেয়েকে যথাসাধ্য বরণ করে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে। তবে প্রতিটি পদক্ষেপেই রয়েছে মড়ক, মহামারীর প্রবল আশঙ্কা। করোনার প্রবল দাপটের মধ্যে এবছর দুর্গাপুজোয় মা দপর্গা কীসে আসছেন, আর কীসে গমন করছেন , তা দেখে নেওয়া যাক শাস্ত্র মতে। জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রামের পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে দেবীকে বরণ করে নেয়ার শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি।খাগড়াছড়ি জেলা জুড়ে ৫৫টি মন্ডপে চলছে দূর্গা পূজার প্রস্তুতিমুলক কাজ। । সনাতন ধর্মালম্বীরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে এবং আনন্দ দুঃখ বেদনা ভাগাভাগি করতে আগামী ২১ অক্টোবর দুর্গতিনাশিনী দূর্গার আগমনের মাধ্যমে শুরু হবে শারদীয় দূর্গোৎসব। তাই শিল্পীরা প্রতিমা নির্মানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলে জেলা জুড়ে চলেছে এখন দূর্গাপূজার ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিমা গুলিতে রংতুলির কাজ শেষের দিকে
সরেজমিনে শহরের বেশ কয়েকটি প্রতিমা শিল্পালয় ঘুরে দেখা যায়, দুর্গা পূজার প্রস্তুতির প্রায় শেষ মুহূর্তে মৃৎ শিল্পীরা ব্যস্ত আপন মনে প্রতিমা রাঙাতে। কাপড় পরিধান ও তুলির আচঁরে জীবন্ত করে তুলছে প্রতিমাকে।
খাগড়াছড়ি মধ্য শালবন ৬নং ওয়র্ড ম্রীশ্রী লোকনাথ মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে প্রতিমা নির্মানে ব্যস্ত রয়েছেন শিল্পীরা , এ সময় মন্দিরে দেখা হয় ম্রীশ্রী লোকনাথ মন্দিরে দূর্গা পূজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক রিপন সরকারের সাথে তিনি বলেন বর্তমান মহামারী করুনা ভাইরাসের কারনে বিশাল আকারে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবেনা তবে স্বাস্থ্য বিদ মেনে চলতে হবে।পূজা উদযাপন পরিষদের ২৬ দফা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মহালয়ার আয়োজন এবার হবে সীমিত আকারে, প্রতিটি কাজে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য বিধি।প্রতিমা তৈরি থেকে পূজা সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভক্ত-পূজারি ও দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা, সকলে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা, দর্শনার্থীদের মধ্যে ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, পূজামণ্ডপে নারী-পুরুষের যাতায়াতের আলাদতা ব্যবস্থা করা, বেশি সংখ্যক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রাখার কথা বলা হয়েছে এসব নির্দেশনায়।কোভিড-১৯ রোগ ছোঁয়াচে হওয়ায় সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা, ভিড় এড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার সার্বিক আইন-শৃঙখলায়ও নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা তালিকা অনুযায়ী এবার সবচেয়ে বেশী পূজা হবে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় একটি ঘটপূজাসহ মোট পূজা হবে ১৯টি। পানছড়ি উপজেলায় মোট পূজো হবে ১০টি। দীঘিনালা উপজেলায় পুজা মন্ডপ হবে ৭টি।
এছাড়াও মহালছড়িতে ২টি, মাটিরাঙ্গায় ৬টি, গুইমারায় ৪টি, রামগড়ে ২টি, মানিকছড়িতে ৩টি ও লক্ষীছড়িতে ১টি পুজাসহ মোট ৫৪টির মধ্যে ৫০টি প্রতিমা পূজা, ৩টি স্থায়ী প্রতিমা পূজা, ১টি ঘট পূজা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা ।
সনাতন ধর্মাবলম্বিদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপুজাকে ঘিরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে কাজ চলছে। মন্ডপে মন্ডপে পুলিশ আনসার ও সাদা পোশাকে পুলিশের বিশেষ টিমসহ ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।