সিলেট ব্যুরো প্রধান: ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে অদ্য (০৭ নভেম্বর) শনিবার সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয় ‘৪৯তম জাতীয় সমবায় দিবস- ২০২০’।
জাতীয় সমবায় দিবসের কর্মসূচীর মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা ও সমবায় পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা ও সম্মাননা স্মারক বিতরণ।
সকাল ১০:০০ ঘটিকায় জাতীয় ও সমবায় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সিলেটের জেলাপ্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা সমবায় কর্মকর্তা উম্মে মরিয়ম এর সঞ্চালনায় এবং সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন এর সার্বিক সহযোগিতায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জালালাবাদ মানব উন্নয়ন সমবায় সমিতির সদস্য মাওলানা জিয়াউর রহমান। পবিত্র বেদ থেকে পাঠ করেন সিলেট কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য সুশেন্দ্র চন্দ্র নম: খোকন।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. মশিউর রহমান এনডিসি, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজউদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. মশিউর রহমান এনডিসি, শুরুতে সিলেট বিভাগের সকল পর্যায়ের সমবায়ীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। সমবায়ের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার জন্য তাঁর সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, জাতীয় দিবস গুলোর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এ সকল দিবসে অনেকের সাফল্য গাঁথা ইতিহাস জানা যায়। পরবর্তীতে সফল সমবায়ীদের সাফল্য গাঁথা ইতিহাস জাতীয় সমবায় দিবসের অনুষ্ঠানে তোলে ধরার অনুরোধ করেন।
‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য কথা উল্লেখ করে বলেন, ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত ও শোষণ মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল। জলমহাল ইজারা প্রকৃত মৎস্যজীবীদের প্রদান করা হয়। কিন্তু আমাদের মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গুলোর আর্থিক সক্ষমতা অর্জন ওব্যবস্থাপনাগত সক্ষমতা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সফল হতে পারছেনা। তাই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনাগত সক্ষমতা অর্জনে আমাদের কাজ করতে হবে। সমবায়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, পাস্পারিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও আর্থিক শৃঙ্খলাবোধ সম্পন্ন মানুষ তৈরী করতে হবে। কৃষি যন্ত্রপাতির সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। কৃষিকাজ ও কৃষককে প্রকৃত সম্মান প্রদান করতে হবে। কৃষি খাতে বিপ্লব করতে হলে সমবায়ের মাধ্যমে কাজ করে যেতে হবে। তবেই দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে। সিলেট বিভাগের জন্য সমবায় আন্দোলন খুবই জরুরী। তিনি সকলকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সমবায়ের মাধ্যমে কাজ করার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বনির্ভরতা অর্জন ও দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশের সমবায় আন্দোলন ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জনে সফলতার পথে এগিয়ে চলেছে। তাই সমবায় কার্যক্রমকে গতিশীল, সক্রিয় এবং যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্টরা আন্তরিকভাবে আরও তৎপর হলে এই খাত প্রসারিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ বলেন, সমবায় সমিতির সদস্যরা নিজেদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও বিরাট অবদান রেখে চলেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতা অর্জনে সমবায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিলেট বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক মৃনাল কান্তি বিশ্বাস। সমবায়ীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন প্রতিশ্রুতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লি: সিলেট সদর এর সভাপতি শিরিন আক্তার, সিলেট জেলা ফটো সাংবাদিক শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লি: সম্পাদক নূরুল ইসলাম, লালবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি: সিলেট এর সম্পাদক গুলজার আহমদ জগলু।