ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের কুশনা দোয়ার পাড়া গ্রামের মৃত গোলাম রসুলের ছোট মেয়ে সেলিনা খাতুন (২৪) খুলনা নার্সিং ইনস্টিটিউটে লেখা পড়ার সময় একই গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলাম এর মেজ ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান,কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব (৩৮)’কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সুকৌশলে লেখা পড়াসহ যাবতীয় খরচ নেন সেলিনা, বিপ্লবের ভালোবাসার মূল্য দিতে নিদর্শন স্বরূপ(১৪ ই জানুয়ারি)২০২২ ইং তারিখে ঝিনাইদহ জেলা নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে(বিপ্লব-সেলিনা) ১ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। এরই সুত্র ধরে সেলিনা’র ভাই আল-আমীন বিভিন্ন সময়ে সেলিনাকে দিয়ে বিপ্লবের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে।
এই প্রতারক আল-আমীন সিও এনজিওতে চাকুরি রত থাকাকালীন ২ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা বাবদ অনিয়মের অভিযোগে বিজ্ঞ আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এবং অর্গানিক হেলথ কেয়ার ধানমণ্ডি কার্যালয়ের ১ লক্ষ টাকার জামিনদার বিপ্লবকে করেন আল- আমিন।শুধু এখানেই শেষ নয় এই আল-
আমীন পারিবারিক দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন উল্লেখ করে বিপ্লবের নিকট থেকে নগদ ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা গ্রহন করে। উল্লেখ থাকে(২০শে-মার্চ)২০২৩ ইং তারিখ থেকে ২ মাসের মধ্যে পরিশোধ করিবে মর্মে আল-আমীন বিপ্লবের নিকট অঙ্গিকার করেন।পরবর্তীতে(৮ই-জুন)
২০২৩ তারিখ থেকে আগামী ১ মাসের মধ্যে সমূদয় টাকা পরিশোধ করিবে মর্মে আল-আমিন অঙ্গিকার করেন যাহা স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি নামা হয়।এই আল-আমীন বিভিন্ন সময়ে বিপ্লবের নিকট থেকে বোনকে দিয়ে প্রেমের বিয়ে নাটকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিপ্লবকে টাকা ফেরৎ না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে।এদিকে সেলিনা খুলনা নার্সিং ইনস্টিটিউটে পড়ালেখা করার শেষের দিকে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার কল্যাণশ্রী গ্রামের রফিকুল শেখের ছেলে এস এম ফয়সালের সাথে প্রেমের অভিনয় করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিপ্লবকে পরিশোধ করতে আল-আমিন বোন সেলিনাকে দিয়ে শুরু করে প্রেমের নাটক। নাটকের মোড় শেষ পর্যন্ত (৭ই-অক্টোবর)২০২২ তারিখে সেলিনা-ফয়সালের বিয়ে দেয়। ফয়সালের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে আনতে না পেরে পরবর্তীতে কৌশল করে বোন সেলিনার নার্সিং ইনস্টিটিউটের ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হলে কুশনা গ্রামে আসতে বলেন।সেলিনা নিজ বাড়িতে আসলে আল-আমিন ও তার বোন ফরিদার স্বাক্ষীতে গত ২৫শে এপ্রিল
২০২৩ তারিখে টাকা না দিয়ে বিপ্লবের সাথে আবার নাটকীয় বিয়ে দেন। বিপ্লব যেন তার পাওনা টাকার চাপ সৃষ্টি করে এবং চাইতে না পারে,সেই কৌশল অবলম্বন করে সেলিনা বিপ্লবের বিবাহ দেন এই সুচতুর ভাই আল-আমিন। বিয়ের দিনই বিপ্লবের নিকট থেকে,বিকাশ একাউন্ট ও বিভিন্ন সময় নগদ ১৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নেন আল-আমিন সেই সূত্রে ১৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে মর্মে বিয়ের ফাঁদে ফেলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেন আল-আমীন।বিবাহের পর থেকে আবার পূনরায় সংসার করতে থাকে সেলিনা-বিপ্লব ১৩ই জুলাই২০২৩ সেলিনা বেড়ানোর নাম করে বোন ফরিদার বাড়িতে যায়।১৮ই- জুলাই
সেলিনার বোন ফরিদার বাড়ি থেকে আসার কথা বললেও আসেনি।পরবর্তীতে বিপ্লব অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেলে ২২শে-জুলাই২০২৩ তারিখে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় একটি ১০৮৩ নম্বর জিডি করেন। পরবর্তীতে ২৪শে-জুলাই)২০২৩ তারিখে বিপ্লব জানতে পারে সেলিনা ফয়সালের সাথে চলে গেছে। এরই একপর্যায়ে বিবাহবহির্ভূত ভাবে অন্যের স্ত্রীকে রাখায় সেলিনা-ফয়সালের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলা বিজ্ঞ আদালতে ১৩/৭/২৩ এবং ১৪/৭/ ২০২৩ তারিখে ৪৯৭/৪৯৮ দঃ বিঃ আইনে ২ টি মামলা দায়ের করেন।সূত্রমতে জানাযায়,এই সেলিনাকে দিয়ে ভাই আল-আমীন বিয়ের নাটক করে বিপ্লবের দেনা মওকুফের স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে
(২১শে-জুলাই)২০২৩ ইং তারিখে পুনরায় সেলিনা’কে দিয়ে বিপ্লবকে তালাক দেয়।২৫শে-এপ্রিল২০২৩ বিয়ে ২১শে-জুলাই২০২৩ তালাক।নাটকীয় বিয়ে দিয়েই শেষ নয় তালাকের পূর্বেই সেলিনাকে দিয়ে ঝিনাইদহ বিজ্ঞ আদালত কোট পারিবারিক ২২/২৩ মামলা দায়ের করেন বিপ্লবের নামে।
বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত খুলনা ৩১১/২৩ তারিখ ১ আগষ্ট ২০২৩ ইংরেজি তারিখে ১০৭/১১৭ সি কাঃ বিঃ ধারায় মামলা দায়ের করেন এবং বিজ্ঞ খুলনা মহানগর হাকিম সোনাডাঙা আদালতে সেলিনাকে দিয়ে আবার বিপ্লবকে আসামী করে ৩ই-অক্টোবর২০২৩ সিআর ৭২০/২৩ মোকদ্দমা ৪৪৮/৩২৩/৩৮০/৩৫৪/৫০৬ দঃ বিঃ ধারায় ঝিনাইদহে ১ টি ও খুলনা আদালতে ২ টি মামলা দায়ের করান এই সেলিনাকে দিয়ে।এস এম ফয়সালকে দিয়ে খুলনা বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ক অঞ্চলে ১০ই-সেপ্টেম্বর
২০২৩ তারিখে ফৌজদারি কার্যবিধি ১০৭/১১৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন বিপ্লবের নামে।আল-আমীনের পাতানো নীল নকশা স্বীকার হয়ে বিপ্লব হারিয়েছে অর্থ,সম্মান।এবিষয়ে জানতে কথা বলা হয় এস এম ফয়সালের মায়ের সাথে। তিনি জানান,আমার ছেলে ফয়সালকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয় সেলিনার ভাই আল-আমিন বোন ফরিদা এবং সেলিনার মা। ওরা আমাদের বাড়িতে এসেছে।কিন্তু আমরা জানতাম না সেলিনার আগে বিয়ে হয়েছে। আমার ছেলের নামে সেলিনার আগের স্বামী মামলা করেছে।আমার ছেলেকে ওদের পরিবারের কেউ স্বীকার হয়নি সেলিনার যে পূর্বে বিয়ে হয়েছে।
সুরখালী ইউপি সদস্য কালাম হোসেন জানান,ফয়সাল বিয়ে করেছে জানতাম না পরে যখন ওর নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়েছে জানতে পারলাম সে বিয়ে করেছে। যে মেয়ে সে বিয়ে করেছে তার আগের স্বামী ফয়সালের নামে মামলা দায়ের করেন। আমি তাকে জামিন করার ব্যবস্থা করেছি।
আরো অনুসন্ধান করে জানা যায়,এস এম ফয়সালের চাচা’র কাছ থেকে তিনি জানান,আল-আমীন আমার কাছে বসে বলে,আমার বোনটাকে একজন ৭/৮ বছর ধরে পড়াশোনার যাবতীয় খরচসহ আমাদের সংসার পর্যন্ত চালিয়েছে কি দিয়ে কি করলাম বুঝতে পারছি না,তখনই বুঝতে পারে ফয়সালের চাচা আল-
আমীন একটা প্রতারক বিশ্বাস ঘাতক বলে আখ্যায়িত করেন।এবিষয়ে গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব জানান,আমার মান-সম্মান সব শেষ তো করেছেই আবার আমার নামে ৪/৫ টা মামলাও দিয়েছে আল-আমীন।