কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ায় র্যাবের বিশেষ অভিযানে আলোচিত চাঞ্চল্যকর কুমারখালীর উপজেলায় ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী (পিয়ন) আব্দুর রাজ্জাক (৫৫) নামের ব্যাক্তিকে হত্যা মামলার
প্রধান আসামী হত্যা মামলার আসামী সহ ৩ জন গ্রেফতার হয়েছে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখ রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনার এক পর্যায়ে দক্ষিণখান থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের সম্মেলন কক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাবের কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কোমান্ডার ক্সোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কোমরকান্দী এলাকার মৃত আকরাম বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল বিশ্বাস (৪৭),একই এলাকার মৃত আকবর শেখের ছেলে মোঃ ছদ্দিন (৪০), এবং লাচেন জোয়াদ্দারের ছেলে মোঃ রাশেদ জোয়াদ্দার (৩৫)।
র্যাব সুত্রে জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখ সকাল ৮ টার সময় কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৫৫) নামের ভূমি কার্যালয়ের এক অফিস সহকারীকে প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দ্বারা গুরুতর আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের আগের রাতে একজন সন্দেহভাজন চোরকে আশ্রয় দেওয়া ও পুলিশের নিকট সোপর্দ করাকে কেন্দ্র করে বর্তমান ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। নিহত রাজ্জাক পরের দিন সকালে কোমরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এক চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় আসামিপক্ষের লোকজন সেখানে উপস্থিত হলে পূর্বের রাতের ঘটনা নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে নিহতের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী মোছাঃ রেবেকা বেগম বাদী হয়ে পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নাম্বার-১৭, তারিখ-১১/০৯/২০২২, ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৩/325/326/307/ 302 /506/১১৪/৩৪ পেনাল কোড। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় সংঘটিত হত্যাকান্ডটি বিভিন্ন জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে র্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১২ সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়ান্ড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ আভিযানিক দল কুষ্টিয়া জেলার পার্শ্ববর্তী পাবনা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলায় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলার প্রধান আসামি সহ আরও কয়েকজন ঢাকা শহরে আত্মগোপন করে আছে বলে জানা যায়।পরে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনার এক পর্যায়ে দক্ষিণখান থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রাজ্জাক হত্যাকান্ডে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহনের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। স্থানীয় জনগণ অনেকেই গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে সরাসরি হত্যাকান্ডে অংশগ্রহন করতে দেখেছে বলে জানা গেছে। আসামিগণ এলাকায় দাঙ্গাবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির হিসেবে পরিচিত বলেও জানান র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার।
এ বিষয়ে র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান জানান, বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারন জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।