Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ

কুষ্টিয়া কুমারখালীর সেই ঘাতক সেতুর কাজ শুরু হয়েছে

 কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম থেকে পান্টি সড়কের সেই প্রাণঘাতক সেতুর পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সেতুর ভাঙা অংশে বাঁশ বেঁধে নেওয়া হয়েছে প্রতিরোধ ব্যবস্থা। টাঙানো হয়েছে নির্মাণাধীন কাজের নিশানা। বিকল্প সড়টিও নির্মাণ করা হয়েছে মজবুত করে। জনগণ ও যানবহন চলছে স্বাভাবিক।
ভাঙা সেতুটি নিয়ে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর সংবাদ প্রকাশের পর প্রকৌশলী অফিস নড়েচড়ে বসে। ঠিকাদার কাজ শুরু করে।
স্থানীয় দাবি জানান, দ্রুত নির্মাণাধীন কাজ শেষ করে দুর্ভোগ হ্রাস করা হোক। অপরদিকে টিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছেন অফিসিয়াল সমস্যার কারনে কাজে বিলম্ব হয়েছে। আশা করছি আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, সেতু ভেঙে সড়কে পুকুর খনন করা হয়েছে। সেতুর ভাঙা অংশে বাঁশের বেড়িবাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁশে সাইনবোর্ডে লেখা আছে উন্নয়ন কাজ চলছে, রাস্তা বন্ধ। সেতুর পাশেই শক্ত ও মজবুত করে মাটি দিয়ে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক দিয়ে জনগণ ও যানবহন চলছে। পুকুরের মধ্যে কিছু শ্রমিক কাজ করছে।
এলাকাবাসী জানায়,  উপজেলার চাদপুর, বাগুলাট ও পান্টি ইউনিয়নের প্রায় লাখ খানেক মানুষের জেলা ও রাজধানী শহরে চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়াও পার্শ্ববর্তি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার একাংশ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে।
সড়কটি গ্রামীণ হলেও ব্যস্ততা রয়েছে বেশ। কিন্তু এই ব্যস্ততম সড়কে পুনঃ নির্মাণ করা হচ্ছে ছোট সেতুতি। সেতু ভেঙে সড়কে ছোট পুকুর খনন করা হয়েছে। চলাচল স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছিল জরাজীর্ণ ড্রাইভেশন সড়ক।
নিত্য প্রয়োজন মেটাতে চলাচলকারীরা জীবণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে সুদিনের ( নতুন সেতুর) অপেক্ষায়। তবে সেতু নির্মাণে কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে আরো দশ মাস আগেই। কিন্তু সেতুর কাজ শুরু হয়েছিলোনা । ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ভোগান্তি বাড়িছে এই সেতুটি।
তাঁরা আরো জানায় পত্রিকায় খবর প্রকাশের পরেরদিনই কাজ শুরু হয়েছে। একটি ভাল রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এখন আর দুর্ঘটনা ঘটছে না। প্রত্যাশা করছি দ্রুত কাজ শেষ করা হোক।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, এসড়কের ২ হাজার মিটার চেইনেজে (আদাবাড়িয়া ভাটা এলাকা) তিন মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন মিটার প্রস্থ বক্স কালভার্টের অনুমোদন দেয় এলজিইডি। ৬০ দিন মেয়াদি একাজের চুক্তিমূল্যও প্রায় ১৮ লক্ষ্য ১২ হাজার ১৯৫ টাকা। ইডেন্ডারের মাধ্যমে একাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া আড়ুয়াপাড়ার মেসার্স আসিফ এন্টারপ্রাইজ। ২০২০ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর একাজের মেয়াদ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ।
প্রকৌশলী কার্যালয় সুত্রে আরো জানা গেছে, সাম্প্রতিক সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী তফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ খুব ব্যস্ততম সড়ক এটি। দশমাস সেতু ভাঙা। কোন কাজ হয়না। প্রতিনিয়নিত দুর্ঘটনা ঘটত। কিন্তু পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরেরদিনই ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে। চলাচলের জন্য ভাল রাস্তাও নির্মাণ করেছে। আজকের পত্রিকা ও প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ।’
বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একজন শিক্ষক সেলিম উদ্দিন শিহাব বলেন, ‘ সেতুটি প্রাণঘাতী হয়ে আছে ১০ মাসের বেশি সময়। কয়েকদিন হল কাজ চলছে। আমরা চাই দ্রুত সেতুর কাজ হোক। মানুষ ভোগান্তি মুক্ত চলাচল করুক।
নির্মাণাধীন কাজের ফোরম্যান রাজু আহমেদ বলেন, খবর প্রকাশের পরেরদিন থেকে কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে পাইলিং এর কাজ চলছে। আশা করছি ৬০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
আদাবাড়িয়া গ্রামের আজিজুলের ছেলে রাকিব বলেন, ‘ দিনেরাতে সব সময় এক্সিডেন্ট হচ্ছে। কারো নজর নেই এদিকে। রাতে অপরিচিতরা পাখির মত গর্তে পরে আহত হচ্ছে। এপর্যন্ত দুইজন মারা গেছেন। দ্রুত সেতুটি নির্মাণ হওয়া দরকার।
এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও ঠিকাদার সাইদুর রহমান লালু বলেন, ‘ সেতুর ভাঙা অংশ টেন্ডার নিয়ে কিছুটা সময় কালক্ষেপন হয়েছিল। বর্তমানে সেতুর কাজ চলছে। বিকল্প রাস্তাটিও মজবুত করা হয়েছে। আশা করছি দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণ হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন,’ নানা জটিলতায় কাজ শেষনি। সপ্তাহখানেক হলো কাজ চলছে। দ্রুত শেষ করতে তদারকি করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘  প্রকৌশলী অফিসকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দ্রুত সেতু বাস্তবায়নে তদারকি করা হচ্ছে।
ক্যাপশনঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম হতে পান্টি সড়কস্থ আদাবাড়িয়া খালপাড়া এলাকার ভাঙা সেতুটি এখন মৃত্যু ফাঁদ।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply