কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা নানা ধরনের অভিযোগ তুলেছে। সপ্তাহে দুই/তিন দিন কর্মস্থলে থাকেন বাকি দিন গুলো নিজ বাড়ী বগুড়ায় অবস্থান করেন বলে জানা গেছে৷ যার ফলে শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারী কাজে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং যথাসময়ে সরকারী নির্দেশনা মেনে কাজ শেষ করতে পারছেন না। এছাড়া তিনি শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিজির প্রতিনিধি দেওয়ার সময় জন প্রতি ১০-২০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে তার ড্রাইভার এর মাধ্যমে তেল খরচ বাবদ ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।
বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের সংগে অশ্লীল ভাষায় কথা বার্তা বলেন। শিক্ষকদের সংগে খারাপ আচরণ করেন । তাঁর কথাবার্তা এবং চলাফেলার মধ্যে কোন অফিসার সুলভ আচরণ নেই। ইতিমধ্যে অনেকে তাকে পাগল ডিইও বলে আখ্যায়িত করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। একজন জেলা শিক্ষা অফিসারের যদি এমন আচরণ হয় তাহলে তার অধীনে শিক্ষক-কর্মকর্তারা মান সম্মান বজায় রেখে কাজকর্ম করতে গিয়ে নানা রকম প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করার জন্য প্রায় ৫-৬ দিন শিক্ষা অফিসে গিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে পাননি প্রতিবেদক। তিনি সব সময় বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন বলে জানিয়েছেন কর্মচারীরা।
অভিযোগ তুলে কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রমজান আলী আকন্দ মাস ছয় হলো এখানে এসেছে। প্রথম থেকেই তিনি অফিস করেন না। সপ্তাহে দুই তিনদিন অফিস করেন। সে বিভিন্ন স্কুলে টু্রে যায়৷ সেখানে গিয়ে তিনি ড্রাইভারের মাধ্যমে ৮ হাজার, ১০ হাজার, ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিভিন্ন তদন্তের কথা বলে হুমকি দিয়ে টাকা নেয়। এ ছাড়াও সে ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগে টাকা নেয়। এনটিআরসি ওয়েতে দ্বিতীয়- চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের অনলাইনের বেতনের জন্য আবেদনে সে মোটা অংকের টাকা নেয়। শুধু তাই নয় ৪ টার পরে ছাড়া সে অফিসে বসেই না। প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, আমি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যেটা দেখছি সে সরকারের কোন নিয়মনীতি মেনেই চলেনা ও অফিসের কোন আদেশ মেনে চলেনা। শিক্ষা অফিসের ৩ তলায় যেখানে বাইরে থেকে অতিথিরা আসার পর থাকার নিয়ম অডিট অথবা ডিডি বা বিভিন্ন শিক্ষা সংক্রান্ত। কিন্তু সেখানে সে একটি রুম নিয়ে থাকেন। যে কয়দিনই সে এখানে থাকে সেই রুম নিয়েই থাকে। অথচ সরকারিভাবে তিনি বাসা ভাড়া থাকার জন্য টাকা নিচ্ছেন। অফিসের ৩ তলায় তিনি বিনা ভাড়ায় বিনা খরচেই থাকেন। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থাগ্রহনের জন্য সচিব বরাবর দরখাস্ত দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। খুব শীগ্রই কুষ্টিয়া জেলার সব প্রধান শিক্ষক নিয়ে একটি মিটিং করবো জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে তার অবৈধ কার্যকলাপের ব্যাবস্থাগ্রহনের জন্য।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রমজান আলী আকন্দের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,কে বলেছে আমি অফিসে থাকিনা আমিতো অফিসেই আছি। এমন উত্তরে প্রতিবেদক জানান আমরা আপনার অফিসে আছি, আপনি নেই তখন তিনি প্রতিবেদককে জানান, আমি ভিজিটে আসছি মিরপুরে কুমারখালীতে। আর আমি এনটিআরসির জন্য টাকা নেই কে বলেছে আপনাদের? তাকে আমার কাছে ধরে নিয়ে আসেন। এ কথা বলেই তিনি কলটি কেটে দেন।