কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ছেলে ঢাকায় ফ্লাট দেয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চারশত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া শীর্ষ প্রতারক শহিদুল ইসলাম রায়হানকে কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে ।
দৌলতপুর কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগীরা প্রতারক শহিদুল ইসলাম রায়হান এর বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক মামলা দায়ের করলে ওই সব মামলায় আদালতে জামিন নিতে এসে সে কারাগারে অন্তরীণ হয় । কারাগারে যাওয়ার সময় মামলার বাদীর নানাভাবে ভয়ভীতি ও দেখে নেয়ার হুমকি দেয় বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ম্যানেজার পদে কর্মরত রয়েছেন । ওই কোম্পানিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় জমির মালিক সেজে প্লট দেওয়ার নাম করে র্যাবের হাতে মাদক, অস্ত্র ও জাল টাকাসহ আটক নাসিম রিয়েলষ্টেটের মালিক নাসিম এর সহযোগী ও এজেন্ট শহিদুল ইসলাম রায়হান ৪০০ জন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চারশত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ।
জমির প্লট দেওয়ার নামে গত ১৫ বছর ধরে কারো কাছ থেকে ৫ লক্ষ, কারো কাছ থেকে ১০ লক্ষ, কারো কাছ থেকে ১২ লক্ষ, কারো কাছ থেকে ১৮ লক্ষ, কারো কাছ থেকে ২০ লক্ষ আবার কারো কাছ থেকে ২২ লক্ষ টাকা করে বিপুল পরিমানে অর্থ হাতিয়ে নেয় । পরবর্তীতে প্রতারক রায়হান জমিনা দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে ।
ভুক্তভোগীরা জমি না পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো নানাভাবে তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে রায়হান । প্লট বা জমির জন্য সঞ্চিত অর্থ প্রতারক রায়হানের হাতে তুলে দিয়ে ভক্তি ওইসব জনসাধারণ সর্বস্বান্ত হয় । এক পর্যায়ে টাকা ফেরত না পেয়ে ভুক্তভোগীদের মধ্যে হাসিনা হাসান, আমজাদ হোসেন, আশরাফুল ইসলাম ও আবুল হোসেন কুষ্টিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারক শহিদুল ইসলাম রায়হান এর বিরুদ্ধে মামলা করেন । যার নাম যথাক্রমে সি-আর ২৪৬/২০, সি-আর ২৪৭/২০, সি-আর ২৫৪/২০ ও সি-আর ২৫৫/২০ ।
এসব মামলায় প্রতারক শহিদুল ইসলাম রায়হান বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন ।
প্রতারক রায়হান প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে রাজশাহী জেলার পরা উপজেলার নওহাটা বাজারে জমি কিনে বাড়ি করেন । একইভাবে সে ঢাকার উত্তরা বাড্ডার সাতারকুল রোডে ১০০১ নং ফ্লাট কিনেন ।
দৌলতপুর কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক ভুক্তভোগী মোঃ আবুল হোসেন জানান, প্রতারক শহিদুল ইসলাম রায়হান ঢাকায় প্লট দেয়ার নামে ব্যাংকের মাধ্যমে কিভাবে টাকা নেন যার জমা রশিদ রয়েছে । জমানো অর্থ সব রায়হানের হাতে তুলে দিয়েছে অথচ সে প্লট না দিয়ে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেছে । টাকা ফেরত চাইলে রায়হান উল্টো নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে থাকে । আমার মত অনেকেই প্রতারক রায়হানের জালে ফেঁসেছেন । প্রতারক শহীদুল ইসলাম রায়হান এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ টাকা ফেরতের দাবি জানান তিনি