আকরামুজ্জামান আরিফ কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া বিসিক শিল্পনগরে অর্ধেকের বেশি জায়গায় কারখানা করে সফলভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান বি, আর বি, গ্রুপ। পাশাপাশি আরও অনেক সফল প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এখানে কোনাে প্লট ফাঁকা নেই। সে জন্য জেলার কুমারখালী উপজেলায় নতুন শিল্পনগর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, শিল্পনগরের কারখানাগুলােতে কর্মচাঞ্চল্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলাে জানায়, তারা নিজেদের উদ্যোগে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছে। গ্যাস ছাড়াই ভালােভাবে চলছে। নালা ও পাকা সড়কগুলাে সংস্কার করা হলেও পানি সরবরাহব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।১৯৬৩ সালে কুষ্টিয়া শহরের অদূরে কুষ্টিয়াঝিনাইদহ মহাসড়কসংলগ্ন কুমারগাড়া এলাকায় ১৮ দশমিক ৪৯ একর জমির ওপর কুষ্টিয়া বিসিক শিল্পনগর স্থাপন করা হয়। সেখানে ৮৭টি প্লটের মধ্যে তিনটি বিসিকের প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত হয়। বাকি ৮৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় উদ্যোক্তাদের। পর্যায়ক্রমে ছােট-বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় টিকে থাকতে না পেরে অধিকাংশই ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। ব্যতিক্রম কেবল বিআরবি গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হয়ে ওঠে। বদৌলতে তাদের ব্যবসারও দ্রুত প্রসার ঘটে।কুষ্টিয়া বিসিকে ১০ দশমিক ২২ একর জায়গায় ইতিমধ্যে বিআরবি গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এতে সাত হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিসিকে দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে গাড়ি চালাচ্ছেন শফিকুল আজম। তিনি বলেন, শুরুর দিকে এখানে তেমন কোনাে প্রতিষ্ঠান ছিল না। মাঝেমধ্যে জঙ্গল ও ধানখেত ছিল। তখন তিন-চারটি ছােট প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও বেশি দিন টেকেনি। তবে ৭৮ সালের দিকে বিআরবি কেবলস স্থাপিত হলে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে। একপর্যায়ে তারা এখানে ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তােলে।বিসিকের কর্মকর্তারা বলছেন, জেলার যেসব মানুষ উদ্যোক্তা হতে চান, তাঁদের প্রতি বছর সাত দফায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রয়ােজনে দেওয়া হয় ঋণ। এতে অনেকের সফল ব্যবসায়ী হওয়ার নজির আছে।সার্বিকভাবে কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্পনগর সফল হলেও বিগত কয়েক দশকে এর পরিধি বাড়ানাে হয়নি। নব্বইয়ের দশক থেকে বিসিকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জায়গার অভাবে যেমন স্থাপন করা কলকারখানা সম্প্রসারণ হচ্ছে না, আবার নতুন নতুন কলকারখানাও স্থাপিত হচ্ছে কম। তবে বিসিকসংলগ্ন মাঠে জমি কিনে বিআরবি গ্রুপ তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছে।জানতে চাইলে কুষ্টিয়া বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) সােলায়মান হােসেন বলেন, জেলায় অনেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তােলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু বিসিকে কোনাে জায়গা না থাকায় তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া যায়নি। সে জন্য এখানে-ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কলকারখানা গড়ে উঠছে।কর্মকর্তারা জানান, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ও উদ্যোক্তাদের আগ্রহ দেখে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগর স্থাপন করার পরিকল্পনা চলছে। ইতিমধ্যে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কে কুমারখালীতে ১০০ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে।