মোঃ আকরামুজ্জামান আরিফ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
সাম্প্রতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারি করোনা ভাইরাস। সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে মহামারিতে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তবর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা বর্তমানে করোনার ঝুকিতে রয়েছে। তার মধ্যে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ,মেহেরপুর রয়েছে অন্যতম। বর্তমানে কুষ্টিয়াতেও ব্যাপক হারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও কুষ্টিয়ার সাধারন মানুষ কোন রকম স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা। কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপালের পিসিআর ল্যাবের তথ্যমতে গত সাত দিনে ১২৭৩ টি নমুনা পরীক্ষায় ২২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৭ জন। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও করোনাভাইরাস (কোভিট-১৯) বিস্তার রোধে কুষ্টিয়ায় কিছু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এ–সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তিটি রোববার রাত ১২টায় জারি করেন।বিধিনিষেধ আরোপে করে গণবিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে ৬ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত জেলায় এ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি মোতাবেক জেলায় দোকানপাট ও শপিং মল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বিধিনিষেধ বলা হয়েছে সব ধরনের পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকব।জনসমাবেশ হয়—এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।রাত আটটার পর খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ, কাঁচাবাজার, খুচরা ও পাইকারি বাজারসহ সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। তবে খাবারের দোকান ও হোটেল–রেস্তোরাঁগুলো অনলাইনে অর্ডারের ভিত্তিতে খাবার সরবরাহ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খাওয়া যাবে না।রাস্তা ও পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান সন্ধ্যা সাতটার পর বন্ধ রাখতে হবে।আন্তজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসনসংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।শিল্পকারখানা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। এ সকল বিধি নিষেধ থাকা সত্তেও সাধারন জনগন কোনভাবেই মানছেনা নিয়মনীতি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন পয়েন্টে আছে কিন্তু যানবাহন চলাচল করার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারছেনা। কুষ্টিয়া শহরের যেকোন পয়েন্টে ঘন্টার মধ্যে প্রায় ১ হাজার যানবাহন চলাচল করছে যার ফলে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। এ ছাড়াও এক পয়েন্টে ৫ -১০ জন পুলিশ মোতায়েন করলেও স্বাস্থ্যবিধী রোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তার পরেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর রাত ৮ টার পর থেকে যেসব দোকান পাট খোলা থাকছে এগুলো আর থাকবেনা। জেলা প্রশাসকের সাথে কথা হয়েছে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন হ্যান্ড মাইক নিয়ে সচেতনতা মূলক বক্তব্য দিবেন ও রাত ৮ টার পর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে ঘুরে দোকানপাট খোলা থাকলে ব্যাবস্থা নিবেন।