আকরামুজ্জামান আরিফ কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
যথাযোগ্য মর্যাদায় ও সরকারী-বেসরকারী নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ায় উদযাপিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসের আয়োজনকে ঘিরে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত, সব বয়সী নারী-পুরুষের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট ভবন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর। বুধবার সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে দিবসের শুভ সূচনা। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কালেক্টরেট ভবন চত্বরে নির্মিত কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এসময় শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা করা হয়।এসময় সভাপতির ভাষণে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।জেলা প্রশাসক আরও বলেন, অবশেষে ন’মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। এ বিজয়ের মধ্যে এলো হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হলো মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর লাখ লাখ ধর্ষণের শিকার মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বিজয়ের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।এরপর অনুষ্ঠিত হয় পুলিশ, আনসার ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং কারারক্ষী কর্তৃক কুচকাওয়াজ ও সালাম গ্রহণ। এসব অনুষ্ঠানে প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এবার কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামে কোন অনুষ্ঠান হয়নি। দিনটি উপলক্ষে সরকারী, বেসরকারী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে করা হয় আলোকসজ্জায় সজ্জিত।এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল মসজিদ ও মন্দিরে মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের কল্যান কামনা করে বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং হাসপাতাল ও এতিম খানায় উন্নত খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।