কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :-
কুষ্টিয়ায় বিগত সময়ে কয়েক শতক জমিতে গ্যান্ডারী চাষ হলেও এ বছরে শুধুমাত্র সদর উপজেলায় গ্যান্ডারী চাষ হচ্ছে ১১২ বিঘা জমিতে। প্রতি বিঘায় গ্যান্ডারীর চাষে বীজ লাগে সাত হাজার টাকার। আর বছর শেষে তা বিক্রি হয় বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকায়। গ্যান্ডারী চাষে প্রতি বিঘাতে কৃষকের লাভ হয় প্রায় দুই লক্ষ টাকা। গ্যান্ডারী একই জমিতে পর পর তিন বছর চাষ করা যায়। প্রথম বছরের বীজেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছর উৎপাদন হয়। তাই প্রথম বছরের তুলনায় ব্যায়ও কম হয় দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে। ফলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে লাভের পরিমাণও বেড়ে যায়। গ্যান্ডারী বাংলাদেশে আঁখ জাতীয় ফসল হিসেবে পরিচিত। যদিও বাংলাদেশের উৎপাদিত আঁখের চরিত্র থেকে গ্যান্ডারী পুরোপুরি ভিন্ন। নরম সুস্বাদু রসালো হওয়ায় এই আঁখ চিবিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি এখন গুড় তৈরীতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই প্রতিনিয়তই দেশে গ্যান্ডারীর চাহিদা বাড়ছে। রোগবালাই ও ঝুঁকি কম থাকায় গ্যান্ডারী চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। অধিক লাভজনক হওয়ায় বেকার যুবকেরাও গ্যান্ডারী চাষে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সঠিক পরামর্শ প্রদানে গ্যান্ডারী দেশের কৃষিখাতকে সমৃদ্ধ করে অথনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন অনেকেই।এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কৃষক নিকবার আলী জানায়, এক বিঘা জমিতে প্রথমে আমি গ্যান্ডারী চাষ করি এবং লাভবান হই। ফলে আমি জমি বাড়িয়ে বর্তমানে সাত জমিতে গ্যান্ডারী চাষ করছি। এতে আমি বছরে বিঘা প্রতি দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা লাভ পাচ্ছি। আমার দেখাদেখি এ অঞ্চলের অনেক কৃষক ও বেকার যুবকেরা গ্যান্ডারী চাষ শুরু করেছে।এ বিষয়ে পাকিবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক বাবলু জানায়, গ্যান্ডারী চাষ লাভজনক হওয়ায় আমি এবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে একলক্ষ টাকা। আশা করছি এই গ্যান্ডারি থেকে দুই লক্ষ টাকা লাভ করতে পারবো। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, গ্যান্ডারী চাষে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে লাভের পরিমাণ আরো বাড়বে।এবিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সোহানুর রহমান জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকের গ্যান্ডারী চাষের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। এছাড়াও তামাক চাষের পরিবর্তে গ্যান্ডারী চাষে কৃষকদের উদ্ধুব্দ করছি। গ্যান্ডারীর রোগ-বালাই ও ঝুঁকি কম থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ফলে কুষ্টিয়ায় কৃষকদের মধ্যে গ্যান্ডারী চাষে আগ্রহ বাড়ছে।