কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!
করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় প্রথম কুষ্টিয়া। জুন মাসে পুরোটাই কুষ্টিয়ায় করোনা দাপট ছিল। অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯ জন মারা গেছেন। এ সময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এটিই সর্বনিম্ন মৃত্যুর ঘটনা বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন, এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এদের মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯৯০টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে নতুন করে ২৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৩৯ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১০ হাজার ৮৭৩ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮২৪ জন। মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ জনে।
এদিকে হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির চাপও আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৬১ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ১৯৩ জন। আর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৬৮ জন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবির বলেন, জুলাই মাসজুড়ে করোনা শনাক্ত ও মৃতের হার ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। তবে সচেতন হলে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। গ্রামের মানুষকে বেশি সচেতন হতে হবে। কেননা, ভর্তি রোগীর বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসছে। মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যেও গ্রামেরই বেশি।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। সবার কাছ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে সহযোগিতা পাচ্ছি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহের জন্য কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধি নিষেধ বা লকডাউন চলবে। এ সময় ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া বাকি সব ধরনের দোকান, শপিংমল বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।