কুষ্টিয়া প্রতিনিধি !!!
সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।সোমবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাতজন ও উপসর্গ নিয়ে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।তিনি আরও বলে, হাসপাতালে ১৮৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩৭ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৪৬ জন হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ডা. এম এ মোমেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৫৫ নমুনা পরীক্ষা করে ১৭২ জন করোনা পজিটিভ হন। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৪৭।আক্রান্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরে ৯৪ জন, দৌলতপুরে ২৫ জন, কুমারখালীতে ১৫ জন, ভেড়ামারায় ১৭ জন, মিরপুরে ১৩ জন ও খোকসায় ৮ জন।জেলায় ৬০ হাজার ৬০৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় সাত হাজার ৩৫৭ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৪০ জন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮৯ জন।কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, ‘হাসপাতালে বাড়ছে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীর চাপ। চাপ সামলাতে সবাইকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের প্রায় প্রত্যেককেই অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। ফলে হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন থেকে হাসপাতালে করোনা রোগী ছাড়া আর অন্য কোনো রোগী ভর্তি নেয়া হচ্ছে না। হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড ঘোষণা করে জরুরী বিভাগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্য রোগীদের পার্শ্ববর্তী ডায়াবেটিস ও আদ্বদীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে।’
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সম্প্রতি কুষ্টিয়া পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু এখানে কঠোর লকডাউন চলছে। এরপরও কেন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তা নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।উল্লেখ্য, অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা কুষ্টিয়ায় ২৮ জুন মধ্যরাত থেকে ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত। কঠোর বিধি নিষেধে বা লকডাউন ঘোষণা করে গণবিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা প্রশাসন।লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ শহরের বিভিন্ন প্রবেশ মুখে চেকপোস্ট বসিয়েছে। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত ও অভিযান পরিচালনা করছেন।