কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ইট একটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান।কুষ্টিয়া জেলায় ১শত ৯১টি ইট ভাটা রয়েছে।এর মধ্যে জিগজ্যাক ইটভাটা ৬২টি, ড্রাম চিমনি ইটভাটা ৩০টি ও ১২০ফুট ফিক্সড চিমনি ইটভাটা ৯৯টি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে অনুমোদন লাভ করেছে মাত্র ৫০টি ইট ভাটা।অবশিষ্ট ১শত ৪১ভাটার মধ্যে শতাধিক ইটভাটা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এতে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর হতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। রিটের সময়মত জবাব না দেয়া ও দীর্ঘসূত্রিতার কারনে বন্ধ আছে অনুমোদন।কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ।ঘাটে ঘাটে পয়সা গুনতে হচ্ছে ভাটা মালিকদের। ফলে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অধিকাংশ ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে।২০১৩সন এবং ২০১৯সনের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ ও সংশোধন আইনে ড্রাম চিমনি ও ফিক্সড চিমনির ইটভাটা বন্ধ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও লোকালয় হতে ১কিঃ মিঃ দূরে ভাটা স্থাপনের বিধান রয়েছে। এই আইনে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।আইন অমান্য করে যারা অবৈধ ভাটা নির্মাণ এবং কাঠ পোড়াবেন তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি জমি ব্যবহার না করে মজা পুকুর, খাল, বিল, খাড়ি, দীঘি, নদী, হাওড়, বাওড়, চরাঞ্চল ও পতিত জায়গা হতে মাটি সংগ্রহ করার কথা বলা আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র ও জেলা প্রশাসন হতে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাসিবুশ শাহীদ বলেছেন, ইটভাটার চুল্লি নিচু হলে মানুষ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ধোঁয়ায় গাছ, ফলমূল ও ফসল নষ্ট হয়ে যায়। কয়লা থেকে ব্যাপক ভাবে কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হওয়ায় মানুষ সর্দি, কাশি, শ্বাস কষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৩৬,কুমারখালিতে ১৮,মিরপুরে ২৫,ভেড়ামারায় ৩০ ও দৌলতপুরে ২৬টি ড্রাম চিমনি ও ১২০ ফুট ফিক্সড চিমনি ইট ভাটা রয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশ ভাটা স্হাপন নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদন না পাওয়ায় হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছে। কয়েকটি জিগজ্যাক ভাটার অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন।এরা সবাই মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের,সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের ম্যানেজ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।ইট ভাটা স্হাপনের নীতিমালা না মানায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিবেশ।কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতাউর রহমান বলেছেন,কুষ্টিয়ায় অনুমোদিত ইটভাটা ৫০ আর শতাধিক ইটভাটা হাইকোটে রিট করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে ।চলতি বছরে বিভিন্ন ইটভাটায় অনিয়মের কারণে পৃথক ৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৩৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আক্তারুজ্জামান মিঠুর সাথে কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় নিয়েছেন। অবশেষে কৌশলে এড়িয়ে গেছেন।