কুমিল্লা প্রতিনিধি:
এমনিতেই প্রচন্ড গরম। তার মধ্যে জ্বলছে গ্যাসের চুলা। সেখানে চাল গরম করা হচ্ছে। গরম চাল মেশিনে ফেলার পর বেরিয়ে আসছে শুভ্র মুড়ি। কেউ চাল গরম করছেন। কেউ মেশিনে দিচ্ছেন। কয়েকজন মুড়ি বস্তায় ভরছেন। কেউ দরদাম করে বিক্রি করছেন। কিছু শ্রমিক ট্রাকে মুড়ি তুলে দিচ্ছেন। রমজান মাস উপলক্ষে এমন ব্যস্ত দিন কাটছে কুমিল্লা বিসিকের মুড়ি কারখানাগুলোর মালিক ও শ্রমিকদের। কুমিল্লা বিসিকের এই মুড়ি যাচ্ছে দেশে-বিদেশে। বিসিকে চারটি মুড়ির কারখানা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে বিসমিল্লাহ মুড়ি মিল, বিসমিল্লাহ ফুড, ইফতি ফুড ও বেঙ্গল ফুড। রাত-দিন মেশিনের গর গর শব্দে মুখর চারপাশ। এখানে প্রধানত আছিয়া মুড়ি, তেইশ মুড়ি ও ষোল মুড়ি ও স্বর্ণা মুড়ি ভাজা হয়। আছিয়া ৬০টাকা এবং স্বর্ণা কেজি ৫৩ টাকা দামে পাইকারি বিক্রি হয়।
বিসমিল্লাহ মুড়ির মিলে গিয়ে দেখা গেছে, কারখানায় শ্রমিকরা মুড়ি ভাজায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ চাল দিচ্ছেন, কেউ গরম গরম ভাজা মুড়িগুলো বস্তায় নিচ্ছে, আবার কেউ মাথায় নিয়ে গুদামজাত করছে। কুমিল্লা বিসিকের মুড়ি দেশের দক্ষিণাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল, চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর কুমিল্লাসহ সারা দেশে চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।
মুড়ি তৈরির কারিগর মো. মাসুম জানান, তাদের কারখানায় শুধু চাল আর লবণ দিয়ে মুড়ি ভাজা হয়। এখানে রাসায়নিক মেশানো হয় না। তাই এখানের মুড়ি দিন দিন মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
নগরীর রানীর বাজারের মুড়ির ক্রেতা জামাল হোসেন জানান, রমজান উপলক্ষে প্রতি বছর বিসিকে উৎপাদন হওয়া বড় আকারে মুড়ি ক্রয় করেন। যতটুকু জানি সেখানে চালে শুধু লবণ মিশিয়ে মুড়ি উৎপাদন করা হয়,তা খেতেও সু-স্বাদু।
বিসমিল্লাহ্ মুড়ির মিলের ব্যবস্থাপক সফিউল আলম মামুন বলেন, চালের দাম বাড়ায় উৎপাদন কমেছে। আমরা আগে শতাধিক শ্রমিক দিয়ে কাজ করাতাম। এখন তা ২০ জনের নিচে নেমে এসেছে।
বিসমিল্লাহ্ মুড়ির মিলের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া মাহফুজ জানান, অনেক অসাধু ব্যবসায়ী অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মুড়ি ভাজে। তাদের কারণে আমাদের মুনাফা করা কঠিন হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, বিসিক শিল্প নগরী এলাকা হলেও আমরা কারখানা ক্যাটাগরির গ্যাস সংযোগ পাইনি। আমাদের দেয়া হয়েছে কমার্শিয়াল গ্যাস লাইন। এতে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কুমিল্লার ডিজিএম মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কুমিল্লা বিসিকে উৎপাদিত মুড়ি মান সম্মত। এখানে কারখানা ক্যাটাগরির গ্যাস লাইন সংযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হবে।