মোঃ বাশির আহমেদ, কুমিল্লা: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি বড় অংশ জুড়ে আছে কুমিল্লা। কুমিল্লার পাঁচ উপজেলা পড়েছে ভারতীয় সীমান্তে। রয়েছে একটি স্থলবন্দরও। পাশাপাশি আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশের চার জেলার ভারত ফেরতরা কুমিল্লার বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছেন। তাই কুমিল্লায় এখনো পর্যন্ত করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত না হলেও এর আশাঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না কেউই।
সূত্রমতে, কুমিল্লার আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম, বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত অতিবাহিত হয়েছে। ওইসব এলাকায় বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান। জেলা প্রশাসক জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত প্রাণঘাতী। কুমিল্লাজুড়ে সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া আখাউড়া দিয়ে ভারতফেরত চার জেলার বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করছি।’
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সূত্রমতে, গত এক সপ্তাহে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশ ফেরত ২৯২ জনকে কুমিল্লার বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে হোটেল টোকিওতে ৪৭, জমজম হোটেলে ৫০, বাগিচাগাঁও ময়নামতি হোটেলে ১৯, আলা ফালাহতে ৩০, রেড রুফ ইনে ২৩, ভিক্টোরিতে ৩৫, গোল্ডেন ইনে ২৯, হোটেল পার্কে ২৩, ময়নামতি আলেখারচরে ৩১, মেডিকেল কোয়ারেন্টিনে ৪ ও এক্সপায়ার্ড আছেন একজন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ জানান, ‘ভারত ফেরতদের সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন। কোয়ারেন্টিন করা ব্যক্তিদের ধাপে ধাপে নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন কার্যালয় আমাদের সর্বোচ্চ সাহায্য করছেন।’
কুমিল্লার সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসেন বলেন, ‘কুমিল্লায় এখনো পর্যন্ত ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়নি। কুমিল্লায় কোয়ারেন্টিন করা আখাউড়া হয়ে বাংলাদেশে ফেরতদের নমুনা সংগ্রহ পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে এ পর্যন্ত যত জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের করোনা নেগিটিভ এসেছে।’ তিনি জানান, ‘তবুও আমরা সতর্কবস্থায় আছি। যেহেতু বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ১৫ উপজেলায় আক্রান্তের হার বাড়ছে, সেহেতু কুমিল্লা নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যায়।’ এদিকে কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি চালু থাকলেও গত বছরের এপ্রিলের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত মানুষের আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দর কাস্টমস ও শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম সালাউদ্দিন জানান, ‘১৪ মাস ধরে এ বন্দর দিয়ে মানুষ আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত বিপদজনক। তাই অদূর ভবিষ্যতেও মানুষের যাতায়াতের জন্য এ বন্দর খুলে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘এ পর্যন্ত কুমিল্লায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৭৪হাজার ২৪৩জনের। আক্রান্ত হয়েছেন ১২৭৩৬জন। নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে আক্রান্তের হার ১৭.১৫। মোট মারা গেছে ৪৩২জন। আক্রান্ত বিপরীতে মৃত্যুর হার ৩.৩৫ শতাংশ।