অনলাইন ডেস্ক:
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ও সিনোফার্মের পর তৃতীয় টিকা হিসেবে বাংলাদেশে এসেছে ফাইজারের কভিড-১৯ টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গঠিত টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা সোমবার রাতে এসে পৌঁছেছে।
করোনা টিকার জন্য আগে নিবন্ধনকারীদের ফাইজারের এ টিকা দেওয়া হবে। ঢাকার চারটি কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, ‘পূর্বে নিবন্ধনকারী যারা এখনো কোনো কম্পানির টিকা পাননি তাদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদেরকে এই টিকা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে কোনো সিনিয়র চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী যদি এখনো কোনো টিকা না দিয়ে থাকেন, তাদেরকেও দেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফাইজারের টিকা মাত্র ৫০ হাজার মানুষকে দেওয়া যাবে। এত অল্প টিকা দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকাদানের আওতায় আনা সম্ভব না। চীন থেকে উপহার হিসেবে আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা এ মাসেই আসার কথা রয়েছে। এ টিকা হাতে পেলে আমরা শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু করব।’
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই টিকা মূলত ঢাকা শহরের মানুষকে দেওয়া হবে। ঢাকার চারটি কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলোর নাম খুব দ্রুতই জানিয়ে দেওয়া হবে। কারণ এই টিকার কোল্ড চেইন ব্যবস্থাপনা পুরো দেশে নেই। ইতোমধ্যে নিবন্ধন করেছেন এমন ব্যক্তিরা এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
তবে ফাইজারের টিকা কবে নাগাদ দেওয়া শুরু হবে, তা এখনো ঠিক করেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ ২৮ দিন পর দিতে হবে। ২৭ মে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এই টিকা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এই তাপমাত্রার সংরক্ষণ পাত্র দেশে খুব কম আছে।
ইপিআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচ), রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এই টিকা রাখার মতো উপযুক্ত পাত্র আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, দেশে করোনাভাইরাসের টিকা পেতে এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন। এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জন। উপহার হিসেবে পাওয়া চীনের ৫ লাখ সিনোফার্মের টিকার মধ্যে পর্যবেক্ষণের জন্য ৫০১ জন মেডিক্যাল শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৬৪১ জন চীনের নাগরিকও এই টিকা নিয়েছেন।
নিবন্ধন করে এখনো কোনো টিকা পাননি ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৫৭৫ জন। এদের মধ্যে ৫০ হাজার ৩১০ জন মানুষ ফাইজারের টিকা পাবেন। টিকা সংকটের কারণে বর্তমানে করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে।