উখিয়া, কক্সবাজার সংবাদদাতা:
কক্সবাজারের উখিয়ার কামারপল্লীগুলোতে বেড়েছে ব্যস্ততা। আগে এমন সময় দম ফেলানোর ফুসরত পাওয়া যেত না। এখন আর তা হয় না। তারপরও লোহা পেটানোর টুং-টাং শব্দ বিরাজ করছে পল্লীগুলোতে।উপলক্ষ্য কোরবানীর ঈদ।
অপরদিকে কাঁচামালের দাম বেড়ে গেলেও বাড়তি দামে তৈরি পণ্য বিক্রি করতে না পারায় পারিশ্রমিকের ওপরে প্রভাব পড়ছে বলে দাবি কামারদের। তারপরও কোরবানির ঈদকে ঘিরে সামনের সময়টা ভালো যাবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
উখিয়ার ছয়তাঁরা সংলগ্ন লক্ষিন কর্মকার জানান, সারাবছর যেমন তাদের কাজ ছিল, এখনো সেরকমই রয়েছে। এক কথায় কোরবানির এ সময়টায় কামারপল্লীর পুরোনো সেই জৌলুস এখন আর নেই।
কোটবাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, বহু বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িয়ে আছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে ব্যবসা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। কিন্তু ভিন্ন কিছু করার অভিজ্ঞতা না থাকায় কামারের পেশায়ই পড়ে রয়েছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুর দাম বেড়েছে, মানও বেড়েছে। তবে আমাদের এ কাজে জড়িতদের মান বাড়েনি।
অপর ব্যবসায়ী ছোটন আকন বলেন, যারা কদর বোঝেন, তাদের কাছে আমাদের তৈরি মালামালের কম-বেশি চাহিদা সারাবছরই রয়েছে। তবে কোরবানির ঈদে পশু জবাইয়ের জন্য নতুন ছুরি, চাপাতি, দায়ের কদর অনেক বেড়ে যায়। তাই প্রতিবছরের মতো চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগে থেকেই এসব জিনিস বানিয়ে রাখা হচ্ছে। আবার আমাদের কাছ থেকে পাইকার ও খুচরা ক্রেতারাও তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায়, নতুন করে কেনার থেকে এখন পুরাতন দা-বটি ধার বা শান দিয়ে নেওয়ার কাজ গড় হিসেবে বেশি হয়ে থাকে।
উখিয়া মাছ বাজারের এক কর্মকার বলেন, সাধারণ হাট-বাজারের সময় দিনে লোহার জিনিসপত্র বানিয়ে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। আর ঈদের আগে লোহার তৈরি মালামালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আশাকরি, ঈদের আগ মুহূর্তে এ কর্মব্যস্ততা আরও বাড়বে।
বাজার ঘুরে জানা গেছে, একটি বড় দা ওজন ও আকার ভেদে আড়াইশ’ থেকে ৮শ’ টাকা, চাপাতি প্রকার ভেদে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, বিভিন্ন আকারের ছোরা সাড়ে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আবার বিভিন্ন সাইজের ছোট ছোরা ৫০ থেকে ১শ’ টাকা, বটি ২ থেকে ৬শ’ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি দা-বটিতে ধার বা শান দেওয়ার জন্য যে যেভাবে পারছেন চেয়ে নিচ্ছেন ক্রেতাদের কাছ থেকে।