অনলাইন ডেস্ক:
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রায় ৯ হাজার ৫৬৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ের ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে তিন হাজার ৮৬৭ কোটি ৫৮ লাখ এবং বিদেশি ঋণ পাঁচ হাজার ৭০১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে করোনা মোকাবেলা প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হলো ছয় হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ চলমান ‘কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড পেন্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ল পাঁচ হাজার ৬৫৯ কোটি সাত লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল এক হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক সভায় অংশ নেন। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রী, সচিব রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত থেকে একনেকে অংশ নেন।
করোনা মোকাবেলা প্রকল্পের মোট খরচের মধ্যে সরকার দেবে ১৭২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। প্রথমে সরকারের এই প্রকল্পে টাকা দেওয়ার কথা ছিল ২৭৭ কোটি ৫২ লাখ। অর্থাৎ এই প্রকল্পে সরকার এখন ১০৫ কোটি ছয় লাখ টাকা কম দেবে। প্রথম সংশোধনীর পর প্রকল্পে বিদেশি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৬১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। প্রকল্পে বিদেশি ঋণ ছিল ৮৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৭৬৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এই অতিরিক্ত অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ৫০ কোটি ডলার এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ১০ কোটি ডলার দেবে। প্রকল্পটি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বৈঠক শেষে একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ অনুমোদন পাওয়া ‘কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড পেন্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ‘দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সী ১৩ কোটি ৭৬ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে। এর অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা আমদানি করা হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মহামারির অগ্রাধিকার বিচারে স্বাস্থ্যকর্মী, শ্রমঘন এলাকা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ সবাইকে পর্যায়ক্রমে এই টিকার আওতায় আনা হবে।’
অনুমোদিত বাকি পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘সুন্দরবন সুরক্ষা’ প্রকল্প; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ (৩য় পর্যায়)’ প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (সিলেট জোন) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘চিটাগাং সিটি আউটার রিং রোড (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।