কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসে সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন শিক্ষকদের নিজ নিজ এলাকায় শূন্য পদে পোস্টিং দেওয়ার নামে কোটি টাকা উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজসে উচ্চমান সহকারি ও ২ অফিস সহকারি প্রকাশ্যে শিক্ষকদের কাছ থেকে পোস্টিং এর কথা বলে উৎকোচের টাকা দাবি করছে।ইতিমধ্যে অনেকের কাছ থেকে উৎকোচের টাকা আদায় করেছে উক্ত অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।পরিস্থিতির শিকার শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সদ্য ঘোষিত ফলাফলে কক্সবাজার জেলায় ৪৮৮ জন শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নিদের্শনা মতে, এসব শিক্ষকরা স্ব-স্ব এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূণ্য পদে পদায়ন করার কথা অথচ কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা শিক্ষা অধিদপ্তরে নির্দেশনার বিপরীতে অবস্থান নিয়ে উৎকোচ গ্রহণের কৌশল অবলম্বন করেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির উচ্চমান সহকারি রফিক উদ্দিন, অফিস সহকারি মোহাম্মদ ইয়াছিন ও বশির আহমদ শিক্ষকদের পছন্দের বিদ্যালয়ে পদায়নের শর্তে জনপ্রতি ১ লাখ টাকা দাবি করছে।তাদের চাহিদা মত টাকা দিতে না পারলে নিজ নিজ এলাকায় পোস্টিং দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়।ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষক কোন উপায়ে না দেখে ৮০ হাজার থেকে লাখ টাকা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেয় বলে জানান।এবিষয়ে কক্সবাজার জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দীন পিয়ারু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগের অনুলিপি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।অভিযোগের বিবরনে উল্লেখ করা হয়েছে, সদ্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর শিক্ষকদের পছন্দকৃত বিদ্যালয়ে পদায়নের জন্য উচ্চমান সহকারি রফিক উদ্দিন, অফিস সহকারি ইসলাম, মোহাম্মদ ইয়াছিন, বশির আহমদ মোটা অংকের উৎকোচ হাতিয়ে নিচ্ছে। দাবি করা উৎকোচ প্রদান না করলে শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানী ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারি রফিক উদ্দিনকে দুর্নীতির কারণে ২০১০ সালে শেরপুর বদলি করা হলেও হাইকোর্টে রিট করে তিনি পুনরায় কক্সবাজারে চাকুরিতে নিয়োজিত রয়েছে।তিনি নিয়োগ, প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি, বদলি নামে উৎকোচ আদায় করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।তার গ্রামের বাড়ি পেকুয়ায় নিজস্ব জমি ছাড়াও রয়েছে ৬ তলার বাড়ি। একই সঙ্গে কক্সবাজার শহরে রয়েছে ৫ তলার বিলাসবহুল বাড়ি।তার অপর সহযোগি ইয়াছিনেরও কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি ও শহরে অনেক জমি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। ইতিমধ্যে সিন্ডিকেটটি পছন্দের বিদ্যালয়ে পদায়নের নামে প্রকাশ্যে উৎকোচ আদায় শুরু করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,এ সংক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে দায়ের করা একটি অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসনের কাছেও এসেছে।নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পদায়নের একক ক্ষমতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের।জেলা প্রশাসন ওখানে কোনভাবেই যুক্ত নন। যেহেতু লিখিত অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে গেছে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন এমনটাই আশা করেন তিনি।