ভারতে সম্প্রতি পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে নানা শহরে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় বুধবার বিক্ষোভ থেকে আবারও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবারও ওই জেলার রঘুনাথপুরে সহিংসতা ঘটেছিল। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত চলা ওই সহিংসতায় পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ভাঙচুর চালানো হয় কিছু আবাসিক ভবন ও দোকানে।
মুর্শিদাবাদ জেলার দুটি থানা এলাকায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, সুতির অজগরপাড়া এলাকায় বুধবার সকালে ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু হয়।
অবরোধের ফলে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এসময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তারপরেই জনতার সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বিক্ষোভ থেকে। পুলিশ একাধিক কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ভারতের পার্লামেন্ট উত্তপ্ত তর্কবিতর্কের পর মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলটি পাস হয় এবং ৫ই এপ্রিল শনিবার দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিলটিতে সম্মতি দেওয়ায় এটি এখন ভারতের একটি আইনে পরিণত হয়েছে। তবে এই বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করে অন্তত চারটি পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয় যেগুলো করেছেন এআইএমআইএম, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি বা আরজেডি-র মতো দলের নেতারা এবং অন্তত একটি সিভিল রাইটস গোষ্ঠী। এ ছাড়া মণিপুর, গুজরাত, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সবাইকে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদের নানা জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছিল। মঙ্গলবার বিকেল থেকে ওমরপুর মোড় থেকে ধুলিয়ান বাজার পর্যন্ত ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের নানা জায়গায় অবরোধ করেন মুসলিম ছাত্র ও যুব সংগঠনের বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ সেখানে গেলেই সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত পর্যন্ত পুলিশ ওই এলাকার নানা রাস্তায় লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে।এরপর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এলাকায় পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। ভুয়া খবর বা গুজব যাতে না ছড়ায় তার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ই এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এক বিবৃতিতে মঙ্গলবারের ঘটনার নিন্দা করে জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর যে কোনো প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে দমন করা উচিত। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি পুলিশের লাঠি চালানোর নিন্দা করেছেন।