কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ায় উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯) এর ঝুঁকি মোকাবেলায় কুষ্টিয়া জেলায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। রবিবার (২০ জুন) রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত করোনা সংক্রমণ রোধে কুষ্টিয়া জেলাজুড়ে এবার সাত দিনের কঠোর বিধি নিষেধ (লকডাউন) জারি করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০ জুন রাত ১২ থেকে ২৭ জুন রাত ১২ টা পর্যন্ত কঠোর বিধি নিষেধ (লকডাউন) চলবে। জেলা প্রশাসনের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে রবিবার ২২৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮৩টি পজেটিভ পাওয়া গেছে, করোনায় পজেটিভ রোগী মারা গেছে ৭জন।এদিকে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ২০ জুন ২৫৬ টি নমুনার মধ্যে ৮৩ টি পজিটিভ, যার মধ্যে পিসিআর ল্যাবে ৫০ টি এবং এন্টিজেন টেস্ট ১৭৬ টি নমুনার মধ্যে যথাক্রমে ২৭ টি এবং ৫৬ টি পজিটিভ এসেছে। উপজেলা ভিত্তিক রিপোর্টে সদরে ৩৮ জন, কুমারখালি ৮জন, দৌলতপুরে ৫ জন, ভেড়ামারায় ৮ জন, মিরপুর উপজেলায় ১৪ জন, খোকসায় ১০ জন পজিটিভ এসেছে। জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে রবিবার জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ জুন মধ্যরাত থেকে আগামী ২৭ জুন পর্যন্ত অধিক সংক্রমিত এলাকা বিবেচনায় জেলায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কলকারখানা, শপিংমল, দোকান, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান সকাল ৭টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। বিধি নিষেধ চলাকালে জেলার অভ্যান্তরে, আন্ঃজেলা, দুরপাল্লার সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। ইজিবাইক/ থ্রি হুইলারসহ সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ থাকবে। বিধি নিষেধ আরোপকালনি সময়ে জেলায় সাপ্তাহিক হাট/পশুহাট বন্ধ থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। সকল পর্যটনস্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক (বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। শুধুমাত্র জরুরি সরকারি নির্মাণকাজ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলমান থাকবে এবং এ সংজনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক (বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। শুধুমাত্র জরুরি সরকারি নির্মাণকাজ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলমান থাকবে এবং এ সংক্রান্ত পণ্য পরিবহন বিধি নিষেধের আওতা বহির্ভূত থাকবে।আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন- কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বিদুৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস জরুরি পরিষেবার আওতাভুক্ত হবে এবং তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে। জানা যায়, কুষ্টিয়ায় করোনা চিকিৎসার একমাত্র প্রতিষ্ঠান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। এতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে নেই কোনো আইসিইউ শয্যা। করোনা ইউনিটে শয্যা মাত্র ১০০টি। সেখানে ভর্তি আছে ১৩০জন। নতুন সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, জেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে ৭০৬টি। এসব সিলিন্ডারের মধ্যে জেলা পর্যায়ে রয়েছে ৩৪৭টি। ৩৫৯টি রয়েছে বিভিন্ন উপজেলায়। এছাড়া অক্সিজেন তৈরির ৪২টি কনসেনট্রেটর রয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটের ১০ বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে।